ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রধান ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলো। ইউক্রেনে সেনা পাঠানো বিষয়ে ফ্রান্স ইঙ্গিত দেওয়ার পর ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো তাদের পক্ষ থেকে এমন সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দিল।
এদিকে ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে এমন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেমলিন সতর্ক করে বলেছে, এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে, তা নিশ্চিতভাবেই রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে বিবাদের সূচনা করবে।
গত সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিজয় ঠেকানোর কোনো বিকল্পই পশ্চিমা দেশগুলোর বাদ রাখা উচিত হবে না। যদিও তিনি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে এই মুহূর্তে দেশগুলোর মধ্যে সর্বসম্মত কোনো মত নেই।
প্যারিসে তাড়াহুড়ো করে ডাকা ইউরোপীয় নেতাদের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মাখোঁ এ মন্তব্য করেন। কিয়েভের প্রতি ঝিমিয়ে পড়া সমর্থন চাঙা করার লক্ষ্যে এ বৈঠক আহ্বান করা হয়। পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনাদের সাফল্য অর্জন এবং ইউক্রেনে গোলাবারুদ ও সৈন্যশক্তি কমে আসার মধ্যে আহ্বান করা হয় বৈঠকটি।
তবে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, পোল্যান্ড ও চেক রিপাবলিকের নেতারা তিন বছরে গড়ানো ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেদের কোনো সেনা পাঠানোর আভাস নাকচ করে দেন।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, ইউক্রেনের মাটিতে ইউরোপের দেশ বা ন্যাটোর সদস্যদের পক্ষ থেকে কোনো স্থলসেনা পাঠানো হবে না।
জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসও এ ব্যাপারে একই রকমের অনমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। ভিয়েনায় এক সফরে তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি জার্মানির ভাবনায় নেই।’
পরে হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে, তাদেরও ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। এর বদলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের প্রতি ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়া নিয়ে স্থগিত এক বিলে অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ জানায়। বিলটি অনুমোদন পেলে তা ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।
রাশিয়ার প্রতিবাদ
ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে এমন আলোচনা চলার মধ্যে বিষয়টিতে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে ক্রেমলিন।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ন্যাটো দেশগুলো থেকে ইউক্রেনে সেনাদল পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে এ আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।’ ন্যাটোর সদস্যরা যদি দেশটিতে সেনা পাঠান, তবে কোনো ধরনের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে কোনো সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের আলোচনা করার দরকার হবে না। যেটি দরকার হবে সেটি হলো, সরাসরি সংঘাতে যুক্ত হওয়া বিষয়ে আলোচনা করার।’