রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তিশা ও একই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাকের বিয়ের ঘটনা এখন সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলছে। অমর একুশে বইমেলায় এই দম্পতির দুটি বই প্রকাশ পেলে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে। এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) একটি গণমাধ্যমের ফেসবুক লাইভে মুখোমুখি কথা বলেছেন তিনি। যেখানে উঠে আসে অসম বয়সী এই বিয়ের ঘটনার পেছনের ঘটনাসহ নানান বিষয়।
তিশা-মুশতাকের এই সম্পর্ককে ‘বিয়ে’ বলতে নারাজ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এটাকে আমি বিয়ে বলি না। এটাকে বিয়ে বললে ভুল হবে। তাকে (তিশা) ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। একটি অশ্লীল ভিডিওর মাধ্যমে জিম্মি করে তাকে বাধ্য করে কাবিননামায় স্বাক্ষর করানো হয়েছে। আমার মেয়ে তিশা মেডিকেল বোর্ডের সামনে জবানবন্দি দিয়েছে। সে বলেছে যে, তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। অশ্লীল ছবি ও ভিডিও করে তাকে কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে বলে। সে রাজি না হলে তাকে বলে এগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে, টিসি দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে। সে (মুশতাক) কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়ে এখন এটাকে বিয়ে হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।’
দশম শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালে তিশা মুশতাকের কুনজরে পড়ে জানিয়ে ক্ষুব্ধ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে যখন আইডিয়াল স্কুলের মুগ্ধা শাখার দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন বিতর্ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে তার কুনজরে পড়ে। তখন থেকেই সে (মুশতাক) তাকে ফোন দিয়ে আঁকতে শুরু করে কীভাবে তিশাকে আয়ত্তে নেয়া যায়। আয়ত্তের অংশ হিসেবে তার মেয়েকে আনে আমার মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতো। মুশতাকের মেয়ের নাম তন্মিমা। তন্মিমার সঙ্গে আমার মেয়ের বন্ধুত্ব করায়। তারপর মেয়ের বান্ধবীর পেছনে টাকা খরচ করতে থাকে।’
তিশাকে কাছে পেতে মুশতাকের নানান অপকৌশল তুলে ধরে তিশার বাবা জানান, ‘মুশতাক একদিন এক ছেলেকে ভাড়া করে। ভাড়া করা ওই ছেলেকে আমার মেয়ের বয়ফ্রেন্ড বানায়। এরপর ওই ছেলেকে দিয়েই ছবি তোলায় মুশতাক। এভাবে অন্তত ১০-১২ জনের সঙ্গে আমার মেয়ের অশ্লীল ছবি তুলে সে। তারপর ওই ছবিগুলো দিয়েই তাকে ব্ল্যাকমেইল করে। বিয়ের কাবিননামায় সাক্ষর দিয়েছে মুশতাকের বাসার কাজের লোক।’
‘মতিঝিল আইডিয়াল কলেজের রুমের মধ্যেই তিশাকে কোলে নিয়ে নাচে মুশতাক’ এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। কলেজ অধ্যক্ষের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, এই দায়ভার কলেজের প্রিন্সিপালও এড়াতে পারবে না। একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কীভাবে এসব কাজ হয়। মুশতাক প্রিন্সিপালের ভালো বন্ধু। তাই প্রিন্সিপাল থেকে সে সহযোগিতা নেয়। তখন প্রিন্সিপাল আমার মেয়েকে ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার রুমে। এভাবেই আমার মেয়েকে তারা ফাঁসায়।’