নির্বাচনের পর দেশে চালের দাম বেড়েছে। এ বিষয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এদিকে খাদ্যমন্ত্রী ও সচিবদের হুঁশিয়ারি চলমান। তবুও কমছে না চালের দাম।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাল নিয়ে আপাতত স্বস্তির কোনো খবর নেই। নির্বাচনের পরেই চালের দাম যতটা বেড়েছে, তা এখনও খুব একটা কমেনি। চাল-ভেদে কোনো কোনো বিক্রেতা দু-এক টাকা কম রাখলেও বেশির ভাগ বিক্রেতা আগের বাড়তি দামেই চাল বিক্রি করছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আগের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ও চায়না ইরি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫৩-৫৫ টাকায়। এ ছাড়া মাঝারি পাইজাম ও বিআর ২৮ প্রতি কেজি ৫৬-৬০ টাকা, মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী এম এ আউয়াল বলেন, দাম বাড়ার পর চালের বাজার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে দাম কমার আভাস এখনও পাইনি।
এদিন কারওয়ান বাজারে চাল কিনতে আসা আবু নাঈম বলেন, রোজার আগেই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমাদের মজুত করা চাল কি শেষ হয়ে গেছে? তাহলে এখন চালের দাম বেশি কেন? আমরা কোথায় যাব? কার কাছে অভিযোগ দেব। মিলার, পাইকাররা কারসাজি করে দাম বাড়ায়। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কিছুই করতে পারছে না। আমাদের এভাবেই বেশি দামে সব পণ্য কিনে খেতে হবে। কিছু করার নেই।
কিছুদিন আগে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামে খাদ্য বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় ব্যবসায়ীদের সতর্ক করলে সব ধরনের চালের দাম পাইকারিতে বস্তা প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা দর কমে। তবে খুচরা পর্যায়ে দাম কমেনি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বস্তায় ৫০ বা ১০০ টাকা কমালেও এর কোন বড় প্রভাব পড়বে না বাজারে। মিলার ও কর্পোরেট কোম্পানির গুদামে নজরদারি বাড়াতে হবে। তবে মিল মালিকদের দাবি, চালের আগের মত অর্ডার পাচ্ছেন না তারা।
পাইকার ও মিলাররা ঘুরেফিরে সেই আগের অভিযোগ দিচ্ছেন। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, লাইসেন্সহীন মজুতদারদ ও একে অপরকে দোষ দিয়ে অভিযোগ থেকে মুক্তির চেষ্টা করছেন তারা।
কৃষকরা বলছেন, প্রতি বছর ধানের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। সার, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি এবং শ্রমিকের মজুরি নিয়ে স্বস্তি নেই। তবুও গত বছরের চেয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে হয়েছে।