ক্রমাগত কমছে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি

0
90

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটিতে পোশাক রপ্তানি কমছে। তবে ব্ল্যাক ফ্রাইডে, সাইবার মানডে ও ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল অফিসের (ওটেক্সা) তথ্য অনুসারে, দেশটিতে ক্রেতাদের খরচ কমে যাওয়ায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ২৪ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে। বস্ত্র ও তৈরি পোশাক এক সঙ্গে বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি ২৫ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে।

চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকেও এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের চালান কমেছে। এটি ২২ দশমিক ৪০ শতাংশ কমে হয়েছে ৭২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে চীন থেকে পোশাকের চালান ২৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার ও ভিয়েতনাম থেকে ২২ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে ১৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

ভারত থেকে পোশাকের চালান ২১ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমে চার দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ও পাকিস্তান থেকে ২৮ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ কমে এক দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হওয়ায় গত বছর সারা বিশ্বে মানুষ কম খরচ করেছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় গত বছরের মাঝামাঝি বিদেশি খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছিল। এমন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। আশা করা যায়, শিগগির যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের চালান আবার বাড়বে।

নভেম্বরের চালান থেকে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের চালান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সেসময় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্থানীয় পোশাক কারখানাগুলোয় উত্পাদন কম হয়েছিল। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করায় সে সময়ও উৎপাদন কমে যায়।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আশা করা হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চ থেকে এর চাহিদা বাড়বে। কেননা, বছর শেষে উৎসবগুলোয় পণ্যের মজুদ অনেক কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতাদের প্ল্যাটফর্ম ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের (এনআরএফ) প্রধান অর্থনীতিবিদ জ্যাক ক্লেইনহেঞ্জ এক বিবৃতিতে জানান, অক্টোবর ও নভেম্বরে ক্রেতারা খরচ অনেক কমিয়েছেন। তবে এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য ও পরিষেবায় খরচ বেড়েছে পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ। মানুষ পরিষেবাগুলোয় খরচ বাড়িয়েছেন। এটি করোনা মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। ব্যক্তিগত আয় আগের বছরের তুলনায় সাত শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় তা ক্রেতাদের কেনাকাটা বাড়াতে সহায়তা করছে বলেও এনআরএফের তথ্যে জানা গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.