দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকায় নিয়োজিত বিদেশি কূটনীতিক, আমন্ত্রিত বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক এবং দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, পেশাজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির লনে আয়োজিত ওই ব্রিফিং শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো কুশল বিনিময় অনুষ্ঠানে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি মিশন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে আমন্ত্রণে উল্লেখ করা হয়েছিল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাঁদের ব্রিফ করবেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমন্ত্রিত কূটনীতিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছিল
গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল, কূটনীতিক, আমন্ত্রিত বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক এবং দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, পেশাজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্রিফ করবেন।
কিন্তু বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আজকে কোনো ব্রিফিং হবে না। আজকের অনুষ্ঠানটি মূলত কুশল বিনিময়। আমাদের সহকর্মীরা আপনাদের সঙ্গে একটি নোট বিনিময় করবেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেকেই এসেছেন বলে আপনাদের ধন্যবাদ। আমরা ভবিষ্যতে আরও চমৎকার অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। ২০২৪ সালে আরও চমৎকার বাংলাদেশ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা পাব। আপনাদের অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া আমাদের এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। গত ৫২ বছরে আমাদের অনেক সাফল্য এসেছে। বন্ধুদেশগুলোর অংশীদারত্ব ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এসব অর্জন করেছি। আমরা ভবিষ্যতে এবং এ বছর আরও সহযোগিতা চাই। আসুন আমরা একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর আমন্ত্রিত অতিথিরা কুশল বিনিময় এবং পিঠাসহ তাঁদের জন্য আয়োজন করা নানা ধরনের খাবার উপভোগ করতে এগিয়ে যান। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতার পরপরই ফরেন সার্ভিস একাডেমি ছেড়ে চলে যান।
অবশ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক, বিশিষ্টজন ও কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন। কূটনীতিকদের মধ্যে ঢাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম টোস্টার, কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসসহ অন্তত ৫০ জন কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের নতুন সরকার ও জনগণের সঙ্গে কাজ করতে চীন অঙ্গীকারবদ্ধ। চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার নির্বাচন করতে পেরেছে বলে তাঁরা অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এটা গণতন্ত্র ও জনগণের বিজয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে পাশে থাকবে চীন। বাংলাদেশের নতুন সরকার ও জনগণের সঙ্গে কাজ করতে চীন অঙ্গীকারবদ্ধ।
জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম টোস্টার বলেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে আমরা খুশি। বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে নতুন বছরে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে জার্মানি। বাংলাদেশের সঙ্গে আগামী দিনের উন্নয়ন সহযোগিতা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছি।’
ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, এখনই নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। এ বিষয়ে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হবে।