নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জেএসএস নেতা ঊষাতন তালুকদার

0
149
জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন জেএসএস নেতা ঊষাতন তালুকদার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন রাঙামাটির (২৯৯ নম্বর সংসদীয় আসন) স্বতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতন তালুকদার। তিনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি।

আজ শুক্রবার রাঙামাটি জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের কাছ থেকে তিনি তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। জেএসএস সমর্থিত এই হেভিওয়েট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে এ আসনে আর কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকল না।

বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে পার্বত্য সংসদীয় আসনগুলোতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করেছে। তবে এবার খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের দুই আসনে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল থেকে কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। রাঙামাটি আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঊষাতন তালুকদার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত জেএসএস সমর্থিত এই প্রার্থীও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পার্বত্য সংসদীয় আসনে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের কোনো প্রতিনিধি থাকল না।

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতার কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি না। দলীয় সিদ্ধান্তেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও জনগণের পাশে সবসময় থাকবেন বলে জানান তিনি।

জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ঊষাতন তালুকদার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রত্যাহারের আবেদনপত্রটি সঙ্গে সঙ্গে গৃহীত হয়েছে। বর্তমানে এ আসনে চারজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ওই চার প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, জাতীয় পাটির হারুনুর রশীদ মাতব্বর, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের অমর কুমার দে এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হাফেজ মো. মিজানুর রহমান। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দীপংকর তালুকদার ছাড়া অন্যরা নির্বাচনে একেবারেই নতুন।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। চুক্তি পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে পৃথক ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ কয়েক দফা দাবিতে নির্বাচন বর্জন করেছিল সংগঠনটি।

পরবর্তীতে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রথমবারের মতো জনসংহতি সমিতি থেকে সরাসরি নিজস্ব প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জেএসএস সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন ঊষাতন তালুকদার। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে শেষপর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.