৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার কোনো তথ্য আছে কি না, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গতকাল বুধবারের ব্রিফিংয়ে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, এখন (বুধবার) ঘোষণা করার মতো কোনো নতুন নিষেধাজ্ঞার তথ্য তাঁর কাছে নেই। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে সে বিষয়ে কিছু না বলাটা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের চর্চা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গতকালের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। এক প্রশ্নে বলা হয়, বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকারি হেফাজতে থাকাকালে তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে। এখন সরকার তাঁকে যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। তিনি মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন। তাঁকে যাতে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়, সে জন্য জাতিসংঘ ইতিমধ্যে অনুরোধ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কি একই ধরনের অনুরোধ জানানোর কোনো পরিকল্পনা আছে?
তবে এ প্রশ্নে মিলার কোনো উত্তর দেননি।
আরেক প্রশ্নে বলা হয়, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন ডামি (মেকি) নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভুয়া খবর, ভুয়া ভিডিও-সংবলিত একটি পরিকল্পিত প্রচারণা শুরু করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এই প্রতিবেদনের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবস্থান কী?
জবাবে মিলার বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ঘিরে ‘ডিপফেক’-সংক্রান্ত উদ্বেগজনক প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের নজরে এসেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা এবং অসাধু সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
আরেক প্রশ্নে বলা হয়, ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচার ছাড়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তথাকথিত নির্বাচন সামনে রেখে সরকার পুরো দেশকে কারাগারে পরিণত করছে। এমন অবস্থায় ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশে মৌলিক অধিকার রক্ষায় জনগণের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দাবি করছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রকেও ম্যানেজ করতে পারবেন। নতুন সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া কী?
জবাবে মিলার বলেন, বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গণগ্রেপ্তার ও কারাগারে নির্যাতনের খবরে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাঁরা সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানান। সবাই সহিংসতা বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই যাতে প্রাক্-নির্বাচন ও নির্বাচনকালীন কার্যক্রমে অবাধে অংশ নিতে পারে, তেমন পরিবেশ তৈরির জন্য সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করতে তাঁরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এটা তাঁদের বিশ্বাস, একটি সুস্থ গণতন্ত্রে ভিন্নমতের স্বাধীনতা, সংলাপ ও আলোচনা সংকটের সমাধান দেয়।