বই দেবে সরকার, তাদের দাবি ‘চা-নাশতা’র খরচা

0
139
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সরকারি পাঠ্যবই আনতে গিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মীদের। সেখানে কর্মরত দুই কর্মী ‘চা-নাশতা’র খরচ হিসেবে আদায় করছেন টাকা।

দাবি করা টাকা না দিলে নানা ছুতোয় বই দিতে দেরি করেন তারা। এমনকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করতে ছাড়েন না।

দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর মো. নজরুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক মো. হায়দার আলীর বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালে ১ জানুয়ারি অন্যান্য বছরের মতো বই উৎসব পালন করবে সরকার। এ উপলক্ষে ৪৮টি মাদ্রাসা ও ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যের বই দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় স্থানীয় উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে ২৯ নভেম্বর ২৫টি মাদ্রাসায় বই বিতরণ করে। সেদিন বই আনতে গিয়েছিলেন উপজেলার ফুলঝুড়ি ওয়াজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার জুনিয়র মৌলভি শাহ আলম। হায়দার আলী তার কাছ থেকে ২০০ টাকা আদায় করেন।

প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থীর বই আনতে গিয়েছিলেন আবদুল ওহাব মহিলা আলিম মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নুর হোসেন। তার অভিযোগ, বই নেওয়ার সময় ওই দু’জনকে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। নুর হোসেন বলেন, এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর ধরে সরকারি বই আনতে গেলে তাদের টাকা দিতে হয়।

মিঠাখালী গুদিঘাটা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মাহফুজুল্লাহ জানান, অন্য উপজেলার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মঠবাড়িয়ায় কর্মরত ২০ বছর ধরে। আর হায়দার এখানে আছেন ২৩ বছর হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা ওই কার্যালয়কে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। অফিস সহায়ক হলেও হায়দারের কাছে উপজেলার সব প্রতিষ্ঠানের প্রধান জিম্মি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হলেও দুর্ব্যবহার করতে ছাড়েন না তিনি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অফিস সহকারী নজরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও ধরেননি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন অফিস সহায়ক হায়দার আলী। নির্দিষ্ট দুটি অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ওই সময় তারা দু’জন বই গোছানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, ‘কোনো শিক্ষক যদি কর্মচারীদের স্বেচ্ছায় চা-নাস্তা খাওয়ার টাকা দেন- এর জন্য আমি দায়ী নই।’

সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ দেখছেন না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের। তিনি বলেন, যদি তার কার্যালয়ের কোনো কর্মচারী টাকা নিয়ে থাকেন, তবে সেটা দুঃখজনক। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.