বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে গত মঙ্গল ও বুধবার বেড়াতে আসা চার শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আটকা পড়েছেন। আজ শুক্রবার দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় এসব পর্যটক সেন্ট মার্টিনের হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে বন্দী হয়ে পড়েছেন।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৬ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করার পর পুরো এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। গতকাল রাতে ভারী বৃষ্টি হলেও আজ সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকেরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন; হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁর মালিকেরা অতিরিক্ত মূল্য না রাখেন; সে জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্দেশনা দিয়েছেন। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা কয়েকজন পর্যটক মুঠোফোনে জানান, হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় তাঁদের বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ফোনে কথা বলে তাঁরা ভালো আছেন জানাচ্ছেন। তবে বৃষ্টিতে তাঁরা হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে বন্দী হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন।
ফিরতে না পেরে কয়েকজন বলেন, রবি থেকে সোমবার পর্যন্ত দুই দিন হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধী দল। এর মধ্যে অফিস-আদালত খোলা রয়েছে। সঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পারলে অফিসে সমস্যায় পড়তে হবে; তা নিয়ে চিন্তায় আছেন। বেড়াতে এসে একধরনের হয়রানির মধ্যে পড়েছেন তাঁরা।
সেন্ট মার্টিন বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব খান বলেন, অন্যান্য সময় দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকেরা সৈকত ও জেটিঘাটে বিচরণ করলেও এবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির জন্য বাইরে পর্যটকদের তেমন দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বিপৎসংকেত প্রত্যাহার করা হলে টেকনাফ থেকে জাহাজ পাঠিয়ে পর্যটকদের ফেরত আনা হবে।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজও জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকেরা ফিরতে পারেননি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বিপৎসংকেত প্রত্যাহার করলে টেকনাফ থেকে জাহাজ পাঠিয়ে পর্যটকদের ফেরত আনা হবে। এর আগপর্যন্ত দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়া পর্যটকদের মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।