চীনের সাফল্য, চালু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট

0
180
ইন্টারনেট সেবা

বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে চীন। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান নেটওয়ার্কের চেয়ে কয়েক গুণ দ্রুত হবে এই ইন্টারনেট।

সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, এই ইন্টারনেটের গতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ২ টেরাবাইট, অর্থাৎ এক সেকেন্ডে ১৫০টি সিনেমার সমপরিমাণ ফাইল স্থানান্তর করা সম্ভব। তবে এই গতি কাগজে-কলমে; বাস্তবে গ্রাহক পর্যায়ে হয়তো তা পাওয়া যাবে না। চীনের কোম্পানি হুয়াওয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

গ্রাহকেরা সেকেন্ডে ১ দশমিক ২ টেরাবাইট গতি না পেলেও বর্তমান নেটওয়ার্কের চেয়ে উচ্চগতির ইন্টারনেটের সুবিধা মানুষ ভোগ করবে। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, স্টক ব্যবসা—এসব ক্ষেত্রে উচ্চগতির ইন্টারনেটের তাৎপর্য আছে। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব অনুভূত হবে।

চলতি সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হুয়াওয়ে ও চায়না মোবাইল আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে। বেইজিংয়ের সিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা ও গবেষণা নেটওয়ার্ক কারনেটের সঙ্গে যৌথভাবে এ নেটওয়ার্ক চালু করেছে তারা। এটাকে বলা হচ্ছে ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক, যা ফাইভ–জি প্রযুক্তি সমর্থন করবে। সেই সঙ্গে এর কল্যাণে বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে দ্রুতগতিতে তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।

হুয়াওয়ে ও চায়না মোবাইলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেইজিং ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে ১ হাজার ৮০০ মাইল অপটিক ফাইবার কেব্‌লের মাধ্যমে এ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানে তা সম্প্রসারণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

চলতি বছরের গ্রীষ্মকালে এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই এ ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক চালু হয়ে গেল।

গতকাল চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে বৈঠক করেছেন। এর আগে সি চিন পিং বলেছিলেন, ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক চীনকে সাইবার পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং এর মধ্য দিয়ে মূল ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রসার ঘটবে।

সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, এই ইন্টারনেটের যে গতির কথা বলা হয়েছে, তা মূলত ইন্টারনেটের অবকাঠামোর, গ্রাহক পর্যায়ে তা পাওয়া যাবে না। সে জন্য এআই, সেমিকন্ডাক্টর ও অন্যান্য বেতার প্রযুক্তিতে চীন যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে, এ ক্ষেত্রে তারা সেভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। এতে বিপুল পরিমাণে ব্যান্ডউইথড পাওয়া যাবে, সে জন্য চীনভিত্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য তা সহায়ক হবে।

চীনের সিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ও এই ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক প্রকল্পের পরিচালক উ জিয়ানপিংকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ ব্যবস্থার সফটওয়্যার থেকে শুরু করে হার্ডওয়্যার—সবকিছু চীনে তৈরি এবং চীন স্বাধীনভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তিনি এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত নেটওয়ার্ক হিসেবে আখ্যা দেন।

এ প্রযুক্তি এমন সময় চালু করা হলো, যখন চীনা প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। কিছুদিন আগে মার্কিন প্রতিনিধিদলের চীন সফরের সময় চীনের নিজস্ব ফাইভ–জি চিপ দিয়ে তৈরি হুয়াওয়ের মেট ৬০ প্রো ফোন বাজারজাত করা হয়। অথচ চীনের প্রযুক্তি খাতের রাশ টানতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও চীন কীভাবে এই ফোন বানাল, সে বিষয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.