উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলায় জাপান সরকার বড় ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। বার্তা সংস্থা বলা হয়েছে, জাপানের ফুমিও কিশিদা সরকার মানুষকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির হাত থেকে রেহাই দিতে ১১৩ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে আছে বড় ধরনের করছাড়।
এই প্রণোদনা প্যাকেজের অংশ হিসেবে চলতি বছরের জন্য ৯ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের সম্পূরক বাজেট দেবে ফুমিও কিশিদা সরকার।
সরকারের আর্থিক প্যাকেজ মূলত ভর্তুকি ও নানা ধরনের ছাড়ে ব্যবহার করা হবে। যেমন গ্যাসোলিনসহ বিভিন্ন পরিষেবার মাশুলে সাময়িক ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের আয়করেও ছাড় দেওয়া হবে।
কাঁচামালের দাম বাড়ায় জাপানে মূল্যস্ফীতির হার এক বছরের বেশি সময় ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের ওপরে। এতে মানুষের ভোগব্যয় কমার পাশাপাশি অর্থনীতিতে কালো মেঘ ভর করেছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জাপানের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। পরিণতিতে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে। জাপানের মানুষেরা সাধারণত স্থিতিশীল বাজারের সঙ্গে অভ্যস্ত। সে কারণে সাম্প্রতিক এই মূল্যস্ফীতি তাঁদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে।
জাপানে মূল্যস্ফীতির হার এখন গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে খাদ্য ও জ্বালানি ব্যতীত মূল্যস্ফীতি ছিল ২ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২২ সালের আগস্টের পর যা সর্বনিম্ন, কিন্তু তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের চেয়ে বেশি।
জাপান উৎপাদনশীল দেশ। মহামারির কারণে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় যে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটেছে, তার কারণে কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য বেড়েছে। রপ্তানিতে প্রণোদনা দিতে জাপান সরকার ইয়েনের দর বরাবরই কমিয়ে রাখে। তবে এই দুর্বল ইয়েনের কারণে দেশটির আমদানি ব্যয় আরও বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে জাপানের বয়স্ক জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় তাঁদের ভরণপোষণে রাষ্ট্রের বড় অঙ্কের ব্যয় হয়। এসব কারণে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার বেশি।
এ পরিস্থিতিতে সরকার মজুরি বাড়াতে না পেরে ভর্তুকির মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করছে। জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতির দুর্ভোগ লাঘবে মানুষকে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়েছে। কিন্তু উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলো এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে।