বাংলাদেশে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের জোর দিয়ে বলা উচিত যে বিরোধীদের টার্গেট, হয়রানি এবং কারান্তরীণ রাখলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।
বুধবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় রাজনৈতিক বিক্ষোভের ওপর পুলিশ অহেতুক শক্তি প্রয়োগ করেছে। সব পক্ষ সহিংসতায় অংশ নিলেও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপরই ধরপাকড় চালানো হচ্ছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক সংযম এবং নিজের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করছে।
এইচআরডব্লিউর ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেছেন, ‘অনেক বাংলাদেশি জানান, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে নস্যাৎ করার জন্য রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে সরকারের দমনপীড়নের কারণে তারা সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন।’
মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের পরিষ্কার বলে দিতে হবে, নির্বাচনী হয়রানি চলতে থাকলে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম আর চালাবে না। তাদের উচিত গণগ্রেপ্তার এবং বিরোধীদের ওপর দমনপীড়নের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো। বাংলাদেশ সরকার নির্যাতন বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব কী পড়বে, তারও একটি রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিরোধী দলের হাজারো সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এবং দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর সরকার ক্রমাগত নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার চালিয়ে গেছে। নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের ঘটনাকে বিরোধীদের দমন করার একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
২৮ অক্টোবরের সহিংসতা সম্পর্কে এইচআরডব্লিউ যেসব প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে, তারা বলেছেন– পুলিশ ভিড়ের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের উচিত সহিংস বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন জাতিসংঘের শক্তি প্রয়োগ ও অস্ত্র ব্যবহারে মৌলিক নীতিমালা মেনে চলে– সেই নির্দেশ দেওয়া।
বিবৃতিতে বলা হয়, আটক ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন ও অন্যান্য হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর যে অভিযোগ আছে, সেগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। দোষী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।