
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ বুধবার যৌথভাবে ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আখাউড়া-আগরতলা আন্তসীমান্ত রেল সংযোগের উদ্বোধন করেন। ঢাকা ও নয়াদিল্লি থেকে যৌথভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বোতাম টিপে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এই রেল সংযোগের উদ্বোধন করেন তাঁরা।
একই অনুষ্ঠানে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ভারতের সহায়তার আরও দুটি উন্নয়ন প্রকল্প খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
আখাউড়া-আগরতলা ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ প্রকল্পটি ৩৯২ দশমিক ৫২ কোটি টাকা ভারতের অনুদান সহায়তায় বাস্তবায়িত হয়েছে। ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটারের রেল সংযোগ প্রকল্পটির ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন বাংলাদেশে এবং ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার ত্রিপুরায়। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত সোমবার এই রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়েছিল। তখন বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী ট্রেন চলে। শিগগিরই পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পটি ভারতের রেয়াতি লাইন অব ক্রেডিট দিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। যার মোট প্রকল্প ব্যয় ৩৮৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় এলওসি থেকে ৬৯ দশমিক ১৮ শতাংশ অর্থায়ন)। প্রায় ৬৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার রেললাইনের নির্মাণকাজ ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন হয়েছে, যা মোংলা বন্দরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সুযোগের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রেল সংযোগ চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলা ব্রডগেজ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্পটি ভারতীয় কনসেশনাল ফিন্যান্সিং স্কিম লোনের অধীন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বিআইএফপিসিএল সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড নামে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসিলি যৌথভাবে এই কোম্পানি গঠন করেছে। দুই দেশের দুই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এই কোম্পানির সমান অংশীদার।
বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ডলার। এই কোম্পানির অধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট উদ্বোধন করেন। আজ ইউনিট-২ উদ্বোধন করা হলো।