ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলে তোপের মুখে জাতিসংঘ মহাসচিব

0
141
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ফাইল ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলে তোপের মুখে পড়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে ইসরায়েল।

মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনের উদ্বোধনীতে বক্তব্য দেন গুতেরেস। তিনি তাঁর বক্তব্যে ‘আপত্তিকর’ কথা বলেছেন বলে অভিযোগ ইসরায়েলের।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য গুতেরেসকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।

গুতেরেস তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনির গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের যে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন দেখতে পাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি স্পষ্টভাবে বলছেন, সংঘাতে কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

ইসরায়েলে হামাসের হামলার বিষয়ে গুতেরেস বলেছেন, হামাসের হামলা শূন্য থেকে (কারণ ছাড়া) হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারির শিকার। তাঁরা তাঁদের ভূখণ্ড বসতিতে (অবৈধ ইহুদি বসতি) পরিণত হতে দেখেছেন। সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছেন।

গুতেরেস আরও বলেছেন, তবে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা হামাসের ভয়ংকর হামলাকে ন্যায্যতা দিতে পারে না। আবার এই হামলার জেরে ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্মিলিত শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি ন্যায্যতা পেতে পারে না।

গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। গুতেরেসের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হাইয়াত বিবিসিকে বলেছেন, গুতেরেস তাঁর বক্তব্যে সন্ত্রাসবাদকে ন্যায্যতা দিয়েছেন।

লিওর হাইয়াত আরও বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের (ইসরায়েলি) পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বরং তাঁদেরই দোষারোপ করেছেন। ইসরায়েলিরা এমন নৃশংসতার শিকার হয়েছেন, যা তাঁরা হলোকাস্টের পর আর দেখেননি।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলার্ড এরডানও গুতেরেসের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

গিলার্ড এরডান তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সবচেয়ে ভয়ংকর কর্মকাণ্ডের পেছনে যাঁরা যুক্তি দেখাতে চান, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি অবিলম্বে গুতেরেসের পদত্যাগ দাবি করছেন।

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। তারা দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে যায়।

প্রতিক্রিয়ায় ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫ হাজার ৮০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই হাজারের বেশি শিশু। অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.