সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মহাসমাবেশ থেকে মহাযাত্রা শুরু করবে বিএনপি। যুগপৎভাবে মহাসমাবেশ করবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না৷
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক বাধা আসবে, বিপত্তি আসবে ৷ সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছুটে যেতে হবে।’
সরকার পতনের একদফা দাবিতে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিব ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বলেন, এ মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনও সময় আছে পূজার মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেন, স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বেন নাকি জনগণের আন্দোলনে বিতাড়িত হবেন। আজকে এই লাখো জনতার এ সমাবেশ আপনাকে বার্তা দিয়েছে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) আর নেই। এই সরকার আর থাকবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আজকেও দেখলাম প্রথম আলোর ভুয়া পেজ খুলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তাদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। আজকের এই লাখো জনতার উপস্থিতি প্রমাণ করে এই প্রপাগান্ডা জনগণ বিশ্বাস করে না।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘যখনই আমাদের সমাবেশ হয় তখনই নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আজকের সমাবেশকে কেন্দ্র ২৫০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ থেকে প্রমাণ হয়, সরকার ভীতু হয়েছে। তাদের পায়ের নিচে কোনো মাটি নেই। ভয় থেকেই সরকার এগুলো করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বলছে সংবিধানের বাইরে যাবে না। সংবিধান কাটাছেঁড়া করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয়। আজকে রাষ্ট্রপতি দেশের বাইরে। সংবিধান অনুযায়ী কাউকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিতে হয়। আসলে এই সংবিধান এক পরিবারের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। সংবিধানের কথা বলে সারাদেশকে সংহিংস রাজনীতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশে অনেক জেলা থেকে সাধারণ মানুষ ও দলীয় কর্মীরা ছুটে এসেছে। কারণ, তারা নতুন কর্মসূচি চায়। তারা উদগ্রীব হয়ে আছে কখন এ সরকার বিদায় নেবে। হামলা মামলা জনগণ ভয় পায় না। কোনো কিছু করে দেশের মানুষকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে গতকালও দেখতে গিয়েছিলাম। ডাক্তাররা বলেছেন তাঁকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসার কোনো বিকল্প নাই। তাকে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরই মধ্যে মিথ্যা মামলা দিয়ে ৯৬ জন নেতাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, সাজা দিতে পারলে মাঠ পরিস্কার। দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য পাঁচ বছরে একদিনই জনগণ ভোটের অধিকার পায়, কিন্তু ২০১৪ ও ১৮ সালে সে অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। এ সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। এখনো বলছি ক্ষমতা ছাড়ুন। আজকে মানুষ জেগে ওঠেছে। এই জাগ্রত জনতা ফুসে ওঠার আগে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।‘