দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যেমন পারিবারিক ও পেশাগত কাজ। এ ছাড়া বাজার করা, পড়াশোনাসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। সব কাজের জন্যই প্রয়োজন সুস্থ থাকা। সে ক্ষেত্রে হাঁটুব্যথা হলে সব ধরনের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
হাঁটুব্যথাকে প্রধানত বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। তবে যে কোনো বয়সের মানুষের হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। হাঁটুব্যথা এমন এক সমস্যা, যা ভুক্তভোগীকে বেশ ভোগায়। তবে সমস্যা যা-ই হোক না কেন, তার সমাধান অবশ্যই আছে।
হাঁটুব্যথায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। গবেষকরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি চারজনের একজন হাঁটুব্যথায় ভুগছেন।
হাঁটুব্যথা বেশ জটিল অসুস্থতা। চিকিৎসার আগে হাঁটুর পরীক্ষা করে বের করতে হবে, ঠিক কী কারণে আপনার এই কষ্ট হচ্ছে। হাড়ের ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা, টেনডনের ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, কোয়াড্রিসেফ এক্সপানশনের ব্যথা, লিগামেন্ট ও মিনিস্কাস ইত্যাদি স্ট্রাকচারে সাধারণত কষ্ট হয়। এ ছাড়া হাঁটুর রেঞ্জ কমে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে বের করতে হবে, কী কারণে বা কোন স্ট্রাকচারে একজন হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। কারণ বের করতে পারলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা সারিয়ে তোলা সম্ভব।
চিকিৎসা : হাঁটুর সুস্থতার জন্য সঠিক এবং ফলদায়ক চিকিৎসা হতে পারে ফিজিওথেরাপি। এর মাধ্যমে ব্যথাযুক্ত টিস্যুগুলোয় ওয়াক্সপ্যাক স্ট্রোকিং করে সুন্দরভাবে সফট টিস্যু মোবিলাইজেশন করতে হবে। হ্যামস্ট্রিং, গ্যাস্ট্রোক নিমিয়াস, পপলিটিয়াস এবং কোয়াড্রিসেফ মাসেলের স্ট্রেসিং ও স্ট্রেন্দেনিং করতে হবে; বায়োমেকানিকস অনুযায়ী হাঁটু মোবিলাইজেশন করে হাঁটুকে সম্পূর্ণ বাঁকা ও সোজা করতে হবে, অর্থাৎ হাঁটুর রেঞ্জ অফ মোশন বাড়ানো এবং সঙ্গে সঙ্গে হোল্ড রিলাক্স এক্সারসাইজ করে মাংসের শক্তি বাড়াতে হবে এবং স্ট্যাবিলাইজড করতে হবে। এর সঙ্গে ইলেকট্রিক্যাল মোডালিটিস-আলট্রাসাউন্ড থেরাপি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করে রোগীর কষ্ট দ্রুত কমাতে হবে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসা নিলে হাঁটুর ব্যথা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়।
এই চিকিৎসার পাশাপাশি হাঁটুর ব্যথা কমাতে আরও কিছু উপদেশ মেনে চলতে হবে। যেমন– সিঁড়িতে ওঠানামা কম করতে হবে, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় সঠিক থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করতে হবে। পাশাপাশি হাঁটুর যত্ন নিন, সুস্থ জীবনযাপন করুন।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ব্যথা বিশেষজ্ঞ