স্কুলের ছাদে দৃষ্টিনন্দন ফলের বাগান

0
154
বিদ্যালয়ের ছাদবাগানে চায়না কমলা ও মালটার বাম্পার ফলন

সবুজ বেষ্টনীর মাঝে বিদ্যালয়ের সাদা ভবন দূর থেকে সবাইকে আকৃষ্ট করে। আরও কাছে গিয়ে ছাদের দিকে তাকালে দেখা যায় চোখজুড়ানো দৃশ্য। সেখানে সারি সারি টবে লাগানো গাছে ঝুলছে ফল। ভবনের চারপাশের গাঁদা, গোলাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল এবং ছাদে ঝুলতে থাকা ফলের গন্ধ বিদ্যালয়জুড়ে ভেসে বেড়ায়। এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি বৃক্ষ ও প্রকৃতির প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলছে।

এ নয়নাভিরাম দৃশ্য যশোরের মনিরামপুর উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে রাজগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে চণ্ডীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। জানা গেছে, ২০১৯ সালে শিক্ষকদের প্রস্তাবনায় এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সহযোগিতায় ছাদে বাগান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পর বিদ্যালয় ভবনের দোতলার ছাদে লাগানো হয় ১৮ প্রজাতির শতাধিক ফলদ গাছ। এসব গাছে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। গাছের পরিচর্যা করেন শিক্ষক্ষ-শিক্ষার্থীরা। এ উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র ঘোষ জানান, ২০১৯ সালে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু এবং শিক্ষকমণ্ডলীর অর্থায়নে ছাদবাগান তৈরি করা হয়। ছাদে বড় বড় টবে রোপণ করা হয় চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা, হাইব্রিড মালটা, কাগজিলেবু, পেয়ারা, তেঁতুল, সফেদা, থাই বেল, হাইব্রিড কাঁঠালসহ মোট ১৮ প্রজাতির শতাধিক গাছ।

কৃষিশিক্ষক শামছুর রহমান জানান, রোপণের এক বছরের মাথায় চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা, মালটা ও বাতাবিলেবুর ফলন হয়। তবে বেশি ফলন হয়েছে চায়না ও দার্জিলিং কমলার। থোকায় থোকায় ঝুলছে এসব কমলা। নতুন করে ফলন দেখা দিয়েছে হাইব্রিড মালটা ও দেশি কাগজিলেবুর।

গণিত শিক্ষক বিবেকান্দ বিশ্বাস জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে ছাদবাগানের পরিচর্যা করেন। এ কাজে একটু কষ্ট হলেও গাছে ফল দেখলে আনন্দ হয়। বিদ্যালয়ের কর্মচারী তুহিন হোসেন, রেক্সোনা খাতুন ও সুমন আহমেদ জানান, কোনো অতিথি এলে তাঁকে আপ্যায়ন করা হয় ছাদবাগানের লেবু দিয়ে। এসব ফল মাঝেমধ্যে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝেও বণ্টন করা হয়।

ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি শামছুল হক মন্টু জানান, বিদ্যালয়ের ছাদবাগানটি করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএসপি) আওতায় ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বাগানটি করতে খরচ হয়েছে মোট আড়াই লাখ টাকা। বাকি টাকা শিক্ষকরা দিয়েছেন।

ছাদবাগানের জন্য বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ইচ্ছা থাকলে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব।

এস এম মজনুর রহমান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.