আজ সালমান শাহর জন্মদিন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটে জন্ম নেওয়া সালমান শাহ বেঁচে থাকলে এ বছর ৫৩ বছরে পা রাখতেন। কিন্তু মাত্র ২৪ বছর বয়সেই ঢালিউডের ক্ষণজন্মা নায়ক, কারও মতে সাফল্যের বরপুত্র সালমান শাহর হঠাৎ মৃত্যুসংবাদ সবাইকে হতবাক করে। তবে বাংলা ছবিপ্রেমীরা কেউ তাঁকে মন থেকে মুছে যেতে দেননি। যতই দিন যাচ্ছে, ততই যেন সালমান আরও বেশি মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছেন।
প্রথম সিনেমায় বাজিমাত করেন মৌসুমী ও সালমান শাহ। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি আজও একটি বাঁকবদলের নাম। এই ছবিতে অভিনয় করেই সবার মনের কোণে জায়গা করে নেন মৌসুমী ও সালমান শাহ। অনেকের ধারণা, তাঁদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কও ছিল। বিষয়টিকে পুরোপুরি উড়িয়ে দেন মৌসুমী। তিনি জানান, প্রেমের সম্পর্ক নয়, সালমান ও তাঁর মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল।
ঢালিউডের ক্ষণজন্মা এই নায়ককে আজও মনে পড়ে তাঁর ছোটবেলার বন্ধু এবং ঢালিউডের প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীর। প্রথম ছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’–এ মৌসুমীর সঙ্গে সালমানের জুটি দারুণ জনপ্রিয় হয়। এরপর অনেক নির্মাতাই তাঁদের নিয়ে ছবি করতে আগ্রহী হতে থাকেন। তাঁরা শুরু করেন ‘অন্তরে অন্তরে’ নামে নতুন একটি ছবির শুটিংও। কিন্ত ব্যক্তিদ্বন্দ্বে জড়িয়ে এই জুটি আর তেমন করে কাজ করেননি অনেকটা সময়।
পরবর্তী সময়ে মৌসুমীর সঙ্গে সালমান শাহ অভিনয় করেন ‘দেনমোহর’ চলচ্চিত্রে। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। এ ছাড়া সালমান-মৌসুমী জুটি অভিনয় করেন ‘স্নেহ’ নামের আরও একটি সিনেমায়।
তবে সালমান ও মৌসুমীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিল বেশ চমৎকার। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে মৌসুমী বলেন, ‘অনেকে ভাবতে পারেন, আমাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আসলে সালমান ও আমার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তবে সালমান আর আমার সম্পর্ক গভীর ছিল। অনেক খুঁটিনাটি বিষয় আমরা শেয়ার করতাম, যা কাউকে বলতে পারতাম না। আমার জ্বর হলে ওর ভালো লাগত না, ওর কোনো অসুখ হলে আমার না। আমাদের আত্মার একটা টান ছিল। দেখা গেল, জ্বরের কারণে আমি শুটিংয়ে যেতে পারিনি, পরিচালকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেখা করতে চলে আসত। ওর কোনো ভালো হলে আমার ভালো লাগত, ওর খারাপ হলে আমার খারাপ লাগত। এমনই ছিল আমাদের অনুভূতি।’
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে অভিনয় করলেও তার অনেক আগে থেকে মৌসুমী ও সালমানের যোগাযোগ ছিল। তাঁরা খুলনায় থাকতেন বলে জানালেন মৌসুমী। বললেন, ‘ছোটবেলায় ইমন (সালমান শাহর ডাকনাম) আর আমি প্লে গ্রুপ ও নার্সারিতে একসঙ্গে পড়েছি। বাবার চাকরির কারণে ইমনের পরিবার খুলনা সার্কিট হাউসে থাকত। ওই স্কুলে আমার ফুফু ছিলেন টিচার। ফুফুর ছুটি হওয়া পর্যন্ত ইমনদের বাসায় আড্ডা দিতাম। সে–ও আমাদের বাসায় যাওয়া-আসা করত। ভালো বন্ধুত্ব হয়। এরপর হঠাৎ ওরা ঢাকায় চলে আসে। সিনেমায় অভিনয়ের বছরখানেক আগে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি কোচিং সেন্টারে পড়তাম। ওখানে ওকে প্রায়ই দেখতাম। ও আবার আমার এক বন্ধুর বন্ধু ছিল।’