রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পূর্বশত্রুতার জেরে সম্প্রতি ভুক্তভোগী আরমানের হাতের কবজি চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে সন্ত্রাসীরা। তারা আগেও একই কায়দায় হামলা চালিয়ে লোকজনের অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করেছে। তারা নৃশংসতার এসব ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিত।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। প্রকাশ্যে কুপিয়ে আরমানের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গ্রেপ্তার সাতজন হলেন রাফিদুল ইসলাম ওরফে রানা ওরফে রাফাত (২৩), তুষার হাওলাদার (২৪), আহমেদ খান (২২), মো. হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৪), মো. হানিফ হোসেন ওরফে জয় (২৪), রমজান (২৩) ও মো. রাজু (১৯)। র্যাব বলছে, গতকাল শুক্রবার ঢাকা ও বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে এই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, আসামি তুষার চাপাতি দিয়ে আরমানের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেন। আসামি রাফাত চাপাতি দিয়ে আরমানের ডান হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন করেন। তাঁরা আগে বিভিন্ন সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তিকে একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা করেছিলেন। এভাবে তাঁরা ভুক্তভোগীর শরীরের অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করেছিলেন। নৃশংসতার এসব দৃশ্য তাঁরা ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁরা রাজধানীর মোহাম্মদপুর আদাবর, বেড়িবাঁধ, ঢাকা উদ্যান এলাকায় গত চার–পাঁচ বছর ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এই দলের সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ২০।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, এ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরতেন। তাঁরা চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করতেন। তাঁরা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছিলেন। তাঁরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করতেন। তাঁরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপ্রীতিকর-কুরুচিপূর্ণ ভিডিও শেয়ার করতেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আসামি রাফাত দলটির সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেন। তিনি দলের প্রধান ‘হিটম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন। তুষার সন্ত্রাসী দলটির অন্যতম সদস্য।