বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। তবে খুব অল্পসংখ্যক পুরুষও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের একমাত্র উপায় হলো সঠিক নিয়মে নিয়মিত স্ক্রিনিং করা।
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে কারা আছেন?
সব নারীই এ ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন।
স্তন ক্যান্সারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন কারা?
যাদের পরিবারে স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, যেমন– মা, খালা, বোন, নানি বা রক্তের সম্পর্কের কারও যদি স্তন ক্যান্সার থাকে। যাদের বুকে রেডিওথেরাপি দেওয়ার ইতিহাস আছে।
কত বছর বয়স থেকে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং শুরু করতে হবে?
যাদের পরিবারে স্তন ক্যান্সারের কোনো ইতিহাস নেই, তারা ২৫ বছর বয়স থেকে স্ক্রিনিং শুরু করবেন। যাদের পরিবারে স্তন ক্যান্সারের (মা, খালা, বোন, নানি) ইতিহাস আছে, তারাও ২৫ বছর বয়স থেকে অথবা পরিবারের সদস্যের যে বয়সে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছে, তার বয়স থেকে ১০ বছর আগে স্ক্রিনিং শুরু করতে হবে (যেমন– কারও নানির যদি ৩০ বছর বয়সে ধরা পড়ে, তাহলে তাঁকে ২৫ বছরের পরিবর্তে ২০ বছর বয়স থেকে স্ক্রিনিং শুরু করতে হবে)।
কীভাবে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং করা হয়?
১. ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন
২. ম্যামোগ্রাফি
৩. স্তনের এমআরআই
কত দিন পরপর স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং করতে হবে?
সাধারণত ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি তিন বছর পরপর একজন চিকিৎসক দ্বারা স্তন পরীক্ষা করতে হবে।
বয়স ৪০-৫৪ হওয়া পর্যন্ত প্রতিবছর ক্লিনিক্যাল স্তন পরীক্ষা এবং ম্যামোগ্রাফি (স্তনের এক্স-রে পরীক্ষা) করতে হবে।
৫৫ বছর পর প্রতি দুই বছর পরপর ক্লিনিক্যাল স্তন পরীক্ষা ও ম্যামোগ্রাফি করতে হবে।
যারা স্তন ক্যান্সারের উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন, তাদের প্রতি এক বছর পরপর একজন চিকিৎসকের সহায়তায় স্তন পরীক্ষা করতে হবে এবং ৩০ বছর বয়স থেকে ম্যামোগ্রাফি করতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্তনের এমআরআই করতে হবে।
কার কাছে স্তন স্ক্রিনিং করবেন?
যে কোনো এমবিবিএস চিকিৎসকের কাছে এ পরীক্ষা করা যেতে পারে।
লেখক: ডা. মনি রানী, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, রংপুর স্পেশালাইজড হাসপাতাল