পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জামিন শুনানি বিলম্বিত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর দল।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, দলীয় চেয়ারম্যান ইমরানের জামিন শুনানি বিলম্বিত করা তাঁকে ন্যায়বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা প্রচেষ্টা। এটি কারাগারে তাঁর বন্দীদশা স্থায়ী করার একটি চেষ্টা।
গোপন কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের মামলার (সাইফার মামলা) বিচারক চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ ছুটিতে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন অভিযোগ করেছে পিটিআই।
গত ৫ আগস্ট থেকে পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগারে আছেন ইমরান। রাষ্ট্রীয় উপহার কেনাবেচা-সংক্রান্ত (তোশাখানা) দুর্নীতি মামলায় ৫ আগস্ট তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ইসলামাবাদের একটি বিচারিক আদালত।
সাজা ঘোষণার পরই ইমরানকে তাঁর লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে অ্যাটক কারাগারে পাঠানো হয়। তোশাখানা মামলায় ইমরানকে দেওয়া সাজা গত ২৯ আগস্ট স্থগিত করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। এ মামলায় সাজা স্থগিত হলেও ইমরানের মুক্তি মেলেনি। গোপন কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের মামলায় (সাইফার মামলা) এখন তিনি কারাগারে আছেন।
গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইমরানের আইনজীবী নাঈম হায়দার পানজুথা বলেন, তাঁরা আদালতে পৌঁছানোর পর জানতে পারেন, বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন এক সপ্তাহের জন্য ছুটিতে রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ইমরান ও তাঁর দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে হওয়া সাইফার মামলায় দুজনের জামিন আবেদনের শুনানি বিশেষ আদালতের বিচারক জুলকারনাইনের করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে গেছেন। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে এ ছুটি নিয়েছেন বিচারক।
পিটিআইয়ের কোর কমিটি গতকাল বলেছে, জুলকারনাইনের সপ্তাহব্যাপী ছুটিতে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইমরানের আইনজীবীরা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকের (ডিউটি জজ) দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পিটিআই চেয়ারম্যানের জামিন আবেদনের শুনানি নিতে রাজি হননি। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের।
পিটিআইয়ের কোর কমিটি আরও বলেছে, ইমরানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো বৈষম্যমূলক বিচারের নিকৃষ্টতম উদাহরণ। তাঁকে প্রথমে আইন ও বিচারের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে অস্বাভাবিক তাড়াহুড়োয় তোষাখানার মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। এখন নানা কৌশল করে তাঁকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
গত বছর এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হন। একটি কূটনৈতিক তারবার্তার বরাতে সে সময় তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ষড়যন্ত্র করেছিল। এ ঘটনায় অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীন মামলা করে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।