অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে বাটলারদের হারিয়ে হান্ড্রেডের শিরোপা কারেন-নিশামদের

0
167
রেকর্ড জুটি গড়েন জিমি নিশাম (বাঁয়ে) ও টম কারেন, ইসিবি

জেসন রয় বিস্ময়টা লুকালেন না ম্যাচ শেষে। বললেন, ‘যদি আপনি আমাকে আমাদের ইনিংসের ৩০-৪০ বল পর বলতেন যে এমন কিছু হতে চলেছে, আমি আপনাকে বিশ্বাস করতাম না।’

শুধু রয় কেন, তখন হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইতেন না। লর্ডসে দ্য হান্ড্রেডের ফাইনালে টম কারেন যখন ব্যাটিং করতে আসেন, ৩৬ বলে ওভাল ইনভিন্সিবলসের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ৩৪ রান। জেসন রয়, উইল জ্যাকস, পল স্টার্লিং, স্যাম কারেন ও স্যাম বিলিংস—ফিরে গেছেন সবাই। ম্যানচেস্টার অরিজিনালস সে ম্যাচে তখন পরিষ্কার ফেবারিট। অথচ সেই ম্যাচই ওভাল জিতেছে ১৪ রানে, জিতেছে নিজেদের প্রথম শিরোপা। অন্যদিকে, জস বাটলারের ম্যানচেস্টার এ নিয়ে হারল টানা দ্বিতীয় ফাইনাল।

সেটি মূলত সম্ভব হয়েছে ‘বড়’ কারেন ও জেমস নিশামের রেকর্ড গড়া ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। দুজন মিলে ৬৫ বলে যোগ করেন ১২৭ রান, হান্ড্রেডের ইতিহাসে যেটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। দুজনের জুটি থাকে অবিচ্ছিন্ন। ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন নিশাম। কারেন ছিলেন আরও বিধ্বংসী—৩৪ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা মারেন তিনি।

৫ উইকেটে ৩৪ রানের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ইনিংস শেষে ৫ উইকেটে ১৬১ রান—স্বাভাবিকভাবেই ওভাল উজ্জীবিত ছিল। তবে প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার আগের রাতেই গড়েছে হান্ড্রেডের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। ফলে, ওভাল যে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিল, তা বলা যায় না।

কিন্তু ম্যানচেস্টারের ইতিহাস গড়া জয়ের দুই মূল কারিগর ফিল সল্ট ও জস বাটলার গতকাল তেমন কিছু করতে পারেননি। ১৬ বলে ২৫ রান করে প্রথমে থামেন সল্ট, ওভালকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন ব্যাটিংয়ে স্বপ্নের দিন কাটানো টম কারেনই। বাটলার ১৫ বলে ১১ রান করেন।

ম্যাক্স হোল্ডেন এক প্রান্তে টিকে থাকলেও ম্যানচেস্টারের মিডল অর্ডার দাঁড়াতে পারেনি, ৭২ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। ততক্ষণে বলপ্রতি প্রয়োজনীয় রানরেটও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে সিরিজসেরার পুরস্কার জেতা জেমি ওভারটন (১৯ বলে ২৮*) ও টম হার্টলি (৮ বলে ১৬*) শুধু ব্যবধানই কমাতে পেরেছেন।

ম্যাচশেষে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা টম কারেন, ‘জানি না কীভাবে পুরো ব্যাপার ব্যাখ্যা করব। সত্যিই দারুণ খুশি, ছেলেরা অবিশ্বাস্য কাজ করেছে! এই দলকে নিয়ে গর্বিত। খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলাম না, একটু সময় নিয়েছি, ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছি, নিশের (নিশাম) সঙ্গে জুটি হয়েছে। দুর্দান্ত উপলক্ষ, এবারের হান্ড্রেড অবিশ্বাস্য ছিল।’

জানি না কীভাবে পুরো ব্যাপার ব্যাখ্যা করব। সত্যিই দারুণ খুশি, ছেলেরা অবিশ্বাস্য কাজ করেছে!

টম কারেন

এমনিতে গ্রুপ পর্বে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা ওভাল সরাসরিই খেলেছে ফাইনাল। তবে ফাইনালে অ্যাডাম জাম্পা, হাইনরিখ ক্লাসেন, সুনীল নারাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পায়নি তারা। অবশ্য টম কারেন ও নিশামরা সেসবকে পাত্তাই দেননি।

পুরুষদের আগে একই দিনে নারী হান্ড্রেডের শিরোপা জিতেছে সাউদার্ন ব্রেভ। টানা দুটি ফাইনাল হারার পর অবশেষে শিরোপার স্বাদ পেল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করা ব্রেভ। আগে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ১৩৯ রান তোলা ব্রেভ হারিয়েছে নর্দার্ন সুপারচার্জার্সকে। ব্রেভ অধিনায়ক অ্যানা স্রাবসোল এ ম্যাচ দিয়েই বিদায় বলেছেন পেশাদার ক্রিকেটকে। ইংল্যান্ডের ২০১৭ সালের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক পেয়েছেন রূপকথার বিদায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.