চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে ভিডিও পাঠিয়েছে চন্দ্রযান। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) আজ শুক্রবার ভিডিওটি শেয়ার করেছে।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ভিডিও শেয়ার করে ইসরো লিখেছে, ‘… (এই ভিডিওতে) চন্দ্রযান-৩ রোভার কীভাবে ল্যান্ডার থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠে নেমে এসেছে (তা দেখা যাচ্ছে)।’ খবর- এনডিটিভি
গত বুধবার রোভার চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার সময় দৃশ্যটি ধারণ করা হয় ল্যান্ডার ক্যামেরায়। ভিডিওর সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠে চন্দ্রযান-৩ রোভার প্রজ্ঞানের একটি ছবিও শেয়ার করেছে ইসরো।
বুধবার সন্ধ্যায় চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করে। এর মধ্য দিয়ে চতুর্থ দেশ হিসেবে চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করার গৌরব অর্জন করে ভারত।
মহাকাশযানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে চাঁদের ধূলিকণা, তাপমাত্রাসহ অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হবে বলে জানিয়েছে ইসরো। মহাকাশযানের বিভিন্ন অংশ সচল রাখার ওপর এর প্রভাব পড়বে।
ইসরো জানিয়েছে, কাজ শেষেও ‘বাড়ি’ ফেরা হবে না চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞানের’। তারা চাঁদের মাটিতে এখন ব্যস্ত দিন পার করছে। চাঁদে ১৪ দিনের কাজ হাতে নিয়ে নেমেছে চন্দ্রযান-৩। চাঁদে ১৪ দিন পর সূর্যাস্ত হলে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়বে তারা। নিস্তেজ হয়ে পড়বে ভেতরে থাকা সমস্ত যন্ত্রপাতিও।
চিরতরে চাঁদের মাটিতেই থেকে যাবে তারা। এমনকি, ১৪ দিনের কাজ শেষ হলে ‘কর্মক্ষেত্রে’ মৃত্যুও হতে পারে তাদের। চাঁদে ১৪ দিনের জীবনকাল দিয়েই ইসরো পাঠিয়েছে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে।
বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের যে সমস্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে, যেগুলোর সাহায্যে চাঁদে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে কিংবা সংগ্রহ করবে তথ্য, সেই সব যন্ত্র চলবে সৌরশক্তিতে। ফলে চাঁদে যতক্ষণ সূর্য থাকবে ততক্ষণই প্রাণ থাকবে তাদের।
১৪ দিন পর চাঁদে সূর্যাস্ত (চাঁদে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত হতে সময় লাগে পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন) হলে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়বে তারা। তবে চাঁদের মাটিতে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের নতুন করে প্রাণপ্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা একেবারে নেই বলে উড়িয়েও দেননি।
বিজ্ঞানী দেবীপ্রসাদ দুয়ারির মতে, ইসরো বিষয়টিকে একেবারে নাকচ করে দেয়নি ঠিকই। তবে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে অনেক ‘যদি’ এবং ‘তবে’র ওপর। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ১৪ দিনের ‘সকাল’ কাটানোর পর নামবে ১৪ দিনের অতিশীতল রাতও। এই ১৪ দিন সূর্যরশ্মির একটি কণাও প্রবেশ করবে না চাঁদের ‘দক্ষিণমেরু’তে। তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। তাতে চন্দ্রযান-৩-এর যন্ত্রপাতির বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।