গাজীপুর মহানগরে কোচিং সেন্টারে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ওই কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর মুঠোফোন থেকে ধর্ষণের ভিডিও জব্দ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করার পর আজ বুধবার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসেন ওরফে সাগর (৩০)। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার শরীফ সুন্দর বাজার এলাকায়। দেলোয়ার মহানগরে একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও পরিচালক ছিলেন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ জানায়, ওই ছাত্রী ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ওই বছরের ১ জানুয়ারি দেলোয়ারের কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন তিনি। ১৯ আগস্ট সকালে কোচিংয়ে ক্লাস করতে গেলে অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে তাঁকে ডেকে নিয়ে নিজ কক্ষে ধর্ষণ করেন দেলোয়ার। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখেন তিনি। এ ঘটনা কাউকে জানালে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ওই ছাত্রীকে হুমকি দেন দেলোয়ার। তাই ওই শিক্ষার্থীও ভয়ে কাউকে বিষয়টি জানাননি।
মামলা থেকে জানা যায়, ওই ছাত্রী চলতি বছরের ৩ মে দেলোয়ারের কাছে গিয়ে ভিডিও মুছে ফেলার অনুরোধ করেন। এই সুযোগে ওই দিন আবারও তিনি ধর্ষণ করেন। পরে ২৮ জুলাই শিক্ষক দেলোয়ার মেয়েটিকে ফোন করে জরুরি ভিত্তিতে কোচিং সেন্টারে তাঁর কক্ষে ডেকে আনেন। আবারও তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দিলে রাজি না হয়ে কৌশলে কোচিং সেন্টার থেকে পালিয়ে আসেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বাড়িতে ওই শিক্ষার্থী তাঁর কক্ষে কান্নাকাটি করছিলেন। এ সময় তাঁর মা কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ঘটনা খুলে বলেন তিনি।
গতকালই মেয়েটির মা বাদী হয়ে কোনাবাড়ি থানায় একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই কোচিং সেন্টারটির শিক্ষক দেলোয়ারকে আটক করে। পরে তাঁর মুঠোফোন পরীক্ষা করে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও পায় পুলিশ। পরে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দিয়ে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, কোচিং সেন্টারের ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।