নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ডেঙ্গু বিস্তারের ‘আদর্শ পরিবেশ’

0
221

ডেঙ্গু মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তা পুরোপুরি মানা হচ্ছে না রাজধানীর নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। এমনকি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজেও দেখা গেছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বড় ঘাটতি। তাদের নিজস্ব ফগার মেশিন এবং সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম থাকলেও ডেঙ্গু মশার বিস্তারের আদর্শ পরিবেশ রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানেই। নোংরা আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, ময়লার স্তূপ ও কালো ঘুটঘুটে পানিতে মশার লার্ভা দেখা গেছে। সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ আরও করুণ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই উদাসীনতা ও অবহেলার ফল হয়েছে ভয়াবহ। ভিকারুননিসা ও মতিঝিল আইডিয়ালের গত দেড় মাসে অন্তত সাত শিক্ষক-শিক্ষার্থী মারা গেছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। অভিভাবকরা বলছেন, তারা ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান। কেউ কেউ সন্তানের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পেছনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেছেন। মতিঝিল আইডিয়ালের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাদিন কাউয়ুম ১০ দিন ডেঙ্গু জ্বরে ভুগেছে। জ্বর কমার পর বুধবার থেকে আবার ক্লাস করতে শুরু করেছে। কিন্তু তাকে নিয়ে তার অভিভাবকের শঙ্কার শেষ নেই। মাদিনের বাবা একেএম জহির কাউয়ুম বলেন, ‘আমার বাসায় সব সময় সচেতনতা অবলম্বন করা হয়। বাসা থেকে মশার কামড়ের কোনো সুযোগ নেই। হয় স্কুলে বা কোচিং থেকেই সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে ভয়ে আছি।’

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের পরিবেশ ভীষণ নোংরা। স্কুলের চারপাশ ঘিরে থাকা ড্রেন, বৃষ্টির কারণে সড়কের আনাচে-কানাচে জমে থাকা পানি এডিস মশার বংশবিস্তার ঘটাচ্ছে।

মাউশির নির্দেশ উপেক্ষিত
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোধে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা অফিস পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গত ১৭ মে নির্দেশ দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। মাউশির ওই নির্দেশ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছিল। তবে বহু প্রতিষ্ঠানপ্রধান বিষয়টিতে গা করেননি। ফলে প্রাণ দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো নির্দেশনায় মাউশি বলেছিল, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগুলোর ভবন ও আশপাশের খোলা জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগুলোর ভবন, খোলা জায়গা, মাঠ, ফুলের টব, পানির পাম্প বা পানি জমে এ রকম পাত্র, ফ্রিজ বা এসির পানি জমার ট্রে, পানির ট্যাপের আশপাশের জায়গা, বাথরুম ও কমোড, গ্যারেজ, নির্মাণাধীন ভবন, লিফট ও সিঁড়ি, পরিত্যক্ত বস্তুসহ মশার সম্ভাব্য প্রজননস্থলে যাতে পানি জমতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আরও বলা হয়েছে, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে পরামর্শ দেবেন।

এ ছাড়া ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার বিস্তার রোধে স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতেও বলা হয়েছিল সব শিক্ষক, শিক্ষা, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়গুলোর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিয়ে মাউশির কোনো মনিটরিং নেই। কেউ খোঁজ নিতে বা সরেজমিন দেখতে আসেননি।

ভিকারুননিসার লেকে বুড়িগঙ্গার দুর্গন্ধ
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকেই হাতের ডান পাশে মাঝারি আকারের একটি কৃত্রিম লেক চোখে পড়ে। লেকের পাড় লাল-নীল-সাদা পাথরে সাজানো। এর কাছেই সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি বকের ভাস্কর্যও বসানো হয়েছে। দূর থেকে দৃশ্যটি নজরকাড়া হলেও কাছে গেলে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। লেকের পানি বুড়িগঙ্গার মতোই কালচে ও দুর্গন্ধযুক্ত। ভাসছিল প্লাস্টিকের কোমল পানীয়র বোতল। সবকিছু ছাপিয়ে চোখে পড়ে মশার ওড়াউড়ি এবং পানিতে লার্ভার অবাধ বিচরণ। ডান পাশেই চোখ আটকে যায় একটি বড় ময়লার স্তূপে। সামনের দিকে এগোতেই কলেজ ভবনের পাশে ড্রেনে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কলেজের বাগানের অসংখ্য টবে গাছ লাগানো রয়েছে। এসব টবেও জমে আছে কয়েক দিনের পানি। এসবই এডিশ মশার বংশ বিস্তারের উপযোগী পরিবেশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রধান ক্যাম্পাসে গেলে এই চিত্র দেখা যায়।

দেশজুড়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সবাইকে আতঙ্কিত করছে, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বাদ যাননি দেশের নামকরা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। এ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের চারজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী তিনজন– মূল শাখার একাদশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ইলমা জাহান, মূল দিবা (বাংলা ভার্সন) শাখার তৃতীয় শ্রেণির সেতারা রহমান প্রিয়াঙ্কা ও খন্দকার ঈয়াশা সুলতানা ফাইহা। বসুন্ধরা প্রভাতি শাখার শিক্ষক মোরশেদা বেগমও মারা গেছেন ডেঙ্গুতে।

শুধু বেইলি রোডে এ প্রতিষ্ঠানের মূল ক্যাম্পাসে সাড়ে ১৪ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্রাউজ করে দেখা যায়, সেখানে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংবাদ ছাড়া সচেতনতামূলক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এই পেজের বিভিন্ন পোস্টে এ নিয়ে অনেক মন্তব্যও দেখা যায়।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল কলেজের একাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ১০ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এ ছাড়া দ্বাদশ শ্রেণির অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে রয়েছে মুনতাহার খান ও সানজিদা। তাদের আরেক বন্ধু আনৃণ্য আজাদ ১০ দিন ধরে ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছে। জুলাই থেকে ডেঙ্গুতে এ প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থী এবং একজন শিক্ষক মারা গেছেন।

প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য আনোয়ার কবির ভূঁইয়া (পুলক) বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন মারা গেছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যাও অনেক। আবার অনেকের জ্বর হলেও টেস্ট করাচ্ছে না। এ অবস্থায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তবে অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনতাহার খান মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি নিয়মিত ক্লাস করি। আমার জানামতে, সম্প্রতি অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকের ডেঙ্গুও হচ্ছে। আমি নিজেও দুই সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছি। টেস্ট করিয়েছি, তবে নেগেটিভ এলেও সব লক্ষণ আছে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, আমরা নিজস্ব উদ্যোগে দুটি ফগার মেশিন কিনেছি। এ ছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নির্দেশে সপ্তাহে চারবার মশা মারার ওষুধ ছিটানো হয়। অ্যাসেম্বলিতে সচেতনতামূলক কথাও বলা হয়। অভিভাবকদের ডেকে বলা হয়েছে, যেন শিশুদের পায়জামা ও মোজা-জুতা পরিয়ে স্কুলে পাঠানো হয়। অনেকেই তা মানছেন।

লেকের পানি অপরিষ্কার কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষ মালিদের ডাকেন। তবে তাদের পাওয়া যায়নি। জানানো হয়, দুপুরের খাবার খেতে গেছেন তারা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ।

মতিঝিল আইডিয়ালে মশার কলোনি

দীর্ঘদিন ধরেই দখলে রয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সামনের সড়ক ফুটপাত। কিছু স্থানের ড্রেনে মলমূত্রও চোখে পড়েছে। স্কুলঘেঁষা কলোনির বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। মূল গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই সবুজ মাঠে মশার উপদ্রব স্পষ্ট দেখা গেছে। এ প্রতিষ্ঠানের তিন পাশেই আবাসিক এলাকা। এর দেয়ালঘেঁষা খালি স্থানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। চোখে পড়েছে অব্যবহৃত প্লাস্টিকসামগ্রীও। এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় চলে এসেছে। সচেতন হচ্ছে। অনেকেই শরীরে ক্রিম লাগিয়ে স্কুলে আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, সার্বিকভাবে উপস্থিতি কমেছে।

তবে এখানকার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মিতই মশার ওষুধ ছিটানো হয়। তবে দেয়াল ও ভবনের মধ্যে ফাঁকা জায়গা এবং ভবনের পিছনসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি ও এসির পানিতে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে। সেখানে মশার লার্ভা দেখা গেছে।

বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের শ্রেণি কক্ষ, ভেতরের ড্রেন, বিভিন্ন করিডোরে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালানো হয়। ড্রেনের মধ্যে প্রতিদিন ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি স্কুলের নিজস্ব ফগার মেশিনে শ্রেণি কক্ষসহ আশপাশে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু একাডেমিক ভবনের পেছনে, ভবন ও দেয়ালের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় বৃষ্টি ও এসির পানি জমে আছে। সিঁড়ির নিচে, ক্যান্টিনের পেছনে বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনের পাশে বৃষ্টির পানিতে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে। কয়েকটি খালি কক্ষে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় মশা জন্মানের ঝুঁকি আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দারোয়ান বলেন, অনেক জায়গা বেশ সরু। তাই নিয়মিত সেখানে ফগিং করা হয় না। সিটি করপোরেশন থেকেও সেখানে লার্ভি সাইডিং করা হয় না।

ডেঙ্গু জ্বরে এ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক স্তরের তিন শিক্ষার্থী মারা গেছে। তারা হলো– ইশাত আজহার, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র বনি আমিন ও বনশ্রী শাখার তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি ভার্সনের ‌ছাত্রী আফিয়া জাহান। চিকিৎসাধীন প্রতিষ্ঠানটির ২০ শিক্ষার্থী। ডেঙ্গু পরিস্থিতি বাড়তে থাকলে প্রতিষ্ঠানটির শ্রেণি কক্ষসহ আশপাশের এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। আশপাশের কোথাও যেন মশার লার্ভা জন্ম নিতে না পারে, এ জন্য তদারকির জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক ও গভর্নিং বডির দুটি গ্রুপ কাজ করছে। তারা তিন দিন পর পর প্রতিটি শাখা পরিদর্শন করে অধ্যক্ষের কাছে রিপোর্ট দেয়। তবে মশামুক্ত হয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশন বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের আশপাশে ফগিং করে গেলেও শ্রেণিকক্ষে করে না। তাই তারা নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিটি শাখায় একটি করে ফগার মেশিন কিনেছে।
কোনো শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের অভিভাবক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। প্রয়োজন হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে ভর্তিতে সহযোগিতা করে। তবে এখন পর্যন্ত কতজন শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, সে হিসাব রাখেনি প্রতিষ্ঠানটি। এখানে ১৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

এ প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসীন ইসলামের মা নাজমুন নাহার বলেন, ‘বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমি নিজেও গত ২১ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম। এ সময় বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাইনি। স্কুল থেকে নিয়মিত ক্লাসরুমে ফগিং এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথা বলা হলেও ভয়ে আছি। এ ছাড়া কোচিং সেন্টারগুলোতে মশক নিধন কার্যক্রম তেমন চালানো হয় না। করোনা মহামারির সময় অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হতো। এখন যদি আবার অনলাইনে ক্লাস শুরু করা হয়, তবে ভালো হতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘ছোট বাচ্চা স্কুলে না পাঠালে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাবে। তাই এ পরিস্থিতিতেও স্কুলে পাঠাই। শিক্ষকরা আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু আমার বাচ্চার অ্যাজমাসহ অসুস্থতা আছে। এ নিয়ে ভয় হয়। আবার যদি মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়ে যায়।’

প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান শেখ বলেন, ভবনের পেছনে ও করিডোরেও ফগিং করা হয়। এখন থেকে এখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম আরও বেগবান করা হবে।

মাউশির ভাষ্য

সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলো তদারকির দায়িত্বে থাকা মাউশির উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. আজিজ উদ্দিন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি দেখতে আমরা আঞ্চলিক ৯ জন উপপরিচালককে বলেছি সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দিতে। একাডেমিক কার্যক্রম সুপারভিশনের পাশাপাশি এটিও সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আর রাজধানী ঢাকায় ২৫টি শিক্ষা থানা এলাকা রয়েছে। ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে, থানা শিক্ষা অফিসারদের এ বিষয়টি মনিটরিং করতে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.