বান্দরবানে আলীকদম উপজেলার দুর্গম রংরাং পাহাড়ে ঝরনা থেকে পড়ে গিয়ে গতকাল শনিবার আতাহার ইশরাক (৩০) নামের একজন পর্যটন ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি একটি ট্যুর গাইড প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে যাওয়া আরও ২০ পর্যটক কামচংপাড়া নামে একটি ম্রো পাড়ায় আটকে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন, আলীকদমে সাইংপ্রা ঝরনা থেকে পড়ে মারা যাওয়া আতাহার ইশরাকের লাশ ও আটকে পড়া ২১ পর্যটককে উদ্ধার করে আলীকদম উপজেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁরা জানতে পারেন, প্রায় ৬০ ফুট উঁচু সাইংপ্রা ঝরনা থেকে পা পিছলে পড়ে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আতাহার ইশরাক নামের ওই ব্যক্তি মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন। কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামচংপাড়ার কাছাকাছি সাইংপ্রা ঝরনা অত্যন্ত দুর্গম। সেখানে উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথে হেঁটে যাওয়া ছাড়া কোনো যোগাযোগব্যবস্থা নেই। মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও পাওয়া যায় না। এ জন্য দ্রুত সেখানে গিয়ে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ম্রোদের সহযোগিতায় ঝরনা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে কামচংপাড়ায় নেওয়ার পর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
আলীকদমের স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে আসা ২১ জনের একটি পর্যটকের দল রংরাং পাহাড়ের সাইংপ্রা ঝরনায় যান। তাঁরা গত সপ্তাহে প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত আলীকদম-থানচি সড়কের ২১ কিলোমিটার হেঁটে গিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় প্রশাসন ও স্থানীয় কাউকে জানিয়ে যাননি তাঁরা। মৃত আতাহার ইশরাক চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ট্যুর গাইড অপারেটর প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। তবে তাঁর বাড়ি চকরিয়ার বদরখালী গ্রামে। তিনিই পর্যটক দলের গাইড হিসেবে কাজ করছিলেন।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমান জানিয়েছেন, ২১ জনের পর্যটক দলে মৃত আতাহার ইশরাক গাইড ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী পর্যটকদের আলীকদমের প্রশাসনকে জানিয়ে স্থানীয় ট্যুর গাইড নিতে হয়। কিন্তু তাঁরা কাউকে না জানিয়ে গেছেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে পাওয়া ফোনে তাঁরা ঝরনা থেকে পড়ে একজনের মৃত্যুর কথা জানতে পারেন। সেনাবাহিনীর দোছড়ি ক্যাম্পের একটি দল আতাহারের লাশ উদ্ধারে ও পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে কামচংপাড়ায় দিকে গেছে।