সফল হতে পরিশ্রম জরুরি। অনুশীলন জরুরি। কিন্তু সব সময় কঠোর পরিশ্রম আর অনুশীলনে সফলতা আসে না। ‘বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা’ তত্ত্বের মতো দরকারি কাজে মনোযোগ দেওয়াও জরুরি। এশিয়া কাপ সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরসিংহে ওই তত্ত্বে দলের অনুশীলন করাচ্ছেন। তিনি যার নাম দিয়েছেন ‘টেপারিং’।
হাথুরু এই থিওরিতে অনুশীলন ক্যাম্পের শুরুতে ক্রিকেটারদের কাজে জোর বাড়িয়ে দেওয়ার তাগিদ দেন। ফিটনেসে বেশি মনোযোগ দেওয়া, জোরের ওপর বোলিং করায় গুরুত্ব দেন। এরপর আস্তে আস্তে কমিয়ে আনছেন কাজের চাপ।
যেমন- ১২ আগস্ট এশিয়া কাপের দল ঘোষণা হয়েছে। ওই দিন ক্রিকেটাররা ম্যাচ প্রাকটিস করেছেন। ১৪ ও ১৫ আগস্ট দলের ক্রিকেটাররা স্কিল, টিম ফোকাস ও ফিটনেস ট্রেনিং করবেন। ওই দিনের ক্যাম্প রাখা হয়েছে ছয় ঘণ্টার। ১৬ আগস্ট তাদের বিশ্রাম দিয়ে ১৭ ও ১৮ আগস্ট একই অনুশীলন অর্থাৎ স্কিল, টিম ফোকাস ও ফিটনেস ট্রেনিং রাখা হয়েছে। কিন্তু সময়টা কমিয়ে করা হয়েছে মাত্র চার ঘণ্টা।
এরপর ১৯ আগস্ট আবার বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের। ২০ আগস্ট রাখা হয়েছে ম্যাচ প্রাকটিস। অথচ ট্রেনিং ক্যাম্পের শুরুতে ফিটনেসের মাপকাঠি হিসেবে ইয়ো ইয়ো টেস্টের স্কোর নির্ধারণ করে ক্রিকেটারদের কঠিন পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টির ব্যাখ্যায় হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ক্রিকেট বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘যখন আমাদের ট্রেনিং সেশন থাকে, আমরা চেষ্টা করি (কাজের) ভলিয়মটা একটু বাড়িয়ে দিতে, যেমন- বোলাররা একটু বেশি করে বোলিং করে, ফিটনেসে একটু বেশি জোর দেয়, এরপর খেলার কাছাকাছি আসি এবং কাজের মাত্রা কমিয়ে দেই।’
তিনি বিষয়টি ভেঙে বলেন, ‘এটাকে টেপারিং (ধীরে ধীরে পরিশ্রমের মাত্রা কমিয়ে আনা) বলে। আমরা বেশি অনুশীলন করবো না, বেশি দীর্ঘ সেশন করবো না, বরং ক্রিকেটারদের যা যা করা দরকার সেগুলোই তারা করবে, ম্যাচ খেলার খুব কাছাকাছি একটা কিছু। কঠোর, কঠোর, কঠোর অনুশীলনের চেয়ে এটাই ক্রিকেটারদের ম্যাচ খেলার জন্য বেশি প্রস্তুত করবে।’
হাথুরুসিংহে এই টেপারিং থিওরিতে ম্যাচ অনুশীলনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে অনুশীলন করা। কারণ ম্যাচ পরিস্থিতিতে একজন বোলার আন্তর্জাতিক ম্যাচে যেভাবে বোলিং করেন সেভাবেই করবেন। একজন ব্যাটার ম্যাচে যেভাবে ব্যাটিং করেন যেভাবেই ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করবেন। কোচ হাথুরুর মতে, অনুশীলনের ভলিয়মটা এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চান যাতে খেলোয়াড়রা তাদের সেরা ছন্দের কাছাকাছি থাকে।