প্রায় সাত বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যর আংশিক কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে একই বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের আবদুল্লাহ আল নোমানকে।
আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়। নতুন কমিটির নেতাদের আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিটিতে অর্থনীতি বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের মামুনুর রশিদকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ইতিহাস বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মো. ইয়াসিনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দর্শন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সাজ্জাদ হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ছয় শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতক ও দুই শিক্ষাবর্ষের মধ্যে স্নাতকোত্তর শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে। অর্থাৎ আট বছরের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে হবে, অন্যথায় ছাত্রত্ব বাতিল বলে ধরা হয়। সেই হিসেবে নতুন কমিটির নেতাদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন ছাড়া কারও ছাত্রত্ব নেই।
নতুন এ কমিটির পাঁচ নেতার মধ্যেই তিনজন কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন বলেন, তিনি এ কমিটি মানেন না। পদ পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজনেরই কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান। সভাপতি আলাউদ্দিনকে কেউ চিনত না, জানত না। কখনো কোনো সভা বা কর্মসূচিতে আসেননি। একে তো বয়স বেশি আবার ব্যবসা-বাণিজ্যেও জড়িত। তাই তিনি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান এ কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন।
জানতে চাইলে সদস্য সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, তিনি দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করেছেন। অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন। সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। তবে এ পদ না পাওয়ায় আশাহত।
তিন নেতার অসন্তোষের বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, তাঁদের দল এখন কঠিন সময় পার করছে। এ সময় যোগ্য মনে করার কারণেই কেন্দ্র থেকে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে খোরশেদ আলমকে সভাপতি ও শহীদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ৬৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরের বছর ১৮ মে ২৪৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটি কাগজপত্রে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। গত বছরের ১১ নভেম্বর শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ থাকে দুই বছর।