চীনে সামরিক তথ্য সরবরাহের অভিযোগে দুই মার্কিন নাবিক গ্রেপ্তার

0
135
ক্যালিফোর্নিয়ায় সান দিয়েগো নৌ ঘাঁটিতে নাবিকরা

চীনের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে স্পর্শকাতর মার্কিন সামরিক তথ্য পাঠানোর পৃথক অভিযোগে মার্কিন নৌবাহিনীর দুই নাবিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হলেন জিনচাও ওয়েই। বুধবার নৌ ঘাঁটি সান দিয়েগোতে কর্মস্থলে পৌঁছার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণ জেলার অ্যাটর্নির এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ঘাঁটিটি প্রশান্ত মহাসাগরে নৌবাহিনীর বড় স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি। খবর-সিএনএন

অপর অভিযুক্ত নাবিক হলেন পেটি অফিসার ওয়েনহেং ঝাও। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার পোর্ট হুয়েনেমে নেভাল বেস ভেনচুরা কাউন্টিতে কাজ করছিলেন। ওয়েইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগটি বৃহস্পতিবার প্রথম প্রকাশ করা হয়। দুজনকেই আলাদা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ওয়েইকে ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তাকে নির্দোষ দাবি করে তার পক্ষের আইনজীবীরা একটি আবেদন জমা দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিচার বিভাগের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাট ওলসন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীনকে তথ্য দেওয়ার অভিযোগগুলো আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই তথ্য চীন তাদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়েই যুক্তরাষ্ট্রের এসেক্সে যন্ত্রবিদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। যন্ত্রবিদের সহযোগীরা এক শ্রেণির প্রকৌশলী যারা জাহাজের সরঞ্জাম পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের দায়িত্বে থাকেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সেই ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ওয়েই নৌবাহিনীর জাহাজের ছবি ও ভিডিও চীনের অফিসারকে পাঠিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে জাহাজের লে-আউট ও অস্ত্র ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত ও যান্ত্রিক ম্যানুয়ালও পাঠিয়েছেন। এর বিনিময়ে ওয়েই হাজার হাজার ডলার পেয়েছেন।

এতে আরও বলা হয়, ওয়েই এই সময়ের মধ্যে মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। নাগরিকত্ব পাওয়ায় চীনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ২০২২ সালের ১৮ মে ওয়েইকে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন।

এভাবে চীনের অফিসারের কাছে ওয়েই অনেক তথ্য পাঠিয়েছেন। এসব তথ্য তিনি পাঠাতে পেরেছিলেন কারণ সংরক্ষিত কম্পিউটার সিস্টেমে ওয়েই’র নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছিল।

অপর অভিযুক্ত ওয়েনহেং ঝাও মার্কিন সামরিক স্থাপনায় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন, মেরামত ও সেবার দায়িত্বে ছিলেন। তারও একটি সুরক্ষা ছাড়পত্র ছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি কম্পিউটার স্ক্রিনের ছবি তুলে পাঠিয়েছেন চীনের অফিসারের কাছে। ওই স্ত্রিনে ‘সামরিক প্রশিক্ষণ ও অপারেশনাল আদেশ’ প্রদর্শন করে।

এছাড়া জাপানের ওকিনাওয়ায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থিত মার্কিন রাডার সিস্টেমের ব্লু প্রিন্ট এবং ডায়াগ্রামের ছবি পাঠানোরও অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসবের বিনিময়ে ঝাও চীনের অফিসারের কাছ থেকে প্রায় ১৫ হাজার ডলার পেয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সরকারি দায়িত্বের অংশ হিসেবে নেভির অপারেশনাল নিরাপত্তার এসব তথ্য ঝাওকে সুরুক্ষিত রাখার দায়িত্ব ছিল। তাকে সন্দেহজনক ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট করারও দরকার ছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.