দুর্নীতির অভিযোগে তিন মাস আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে যে ঝড়ের শুরু, তা যেন শেষ হচ্ছে না। দরপত্রে অনিয়ম ও জালিয়াতির দায়ে গত ১৪ এপ্রিল বাফুফে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। ফিফার ৫১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের পর সোহাগের বাইরে আর কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে নিজের তদন্ত কমিটি গঠন করে; যার কাজ শেষ পর্যায়ে। কিন্তু তার আগেই আবারও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এবার ঘাস কাটার মেশিন ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগে চার কর্মকর্তাকে শোকজ করেছে ফিফা। এর মধ্যে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সোহাগ, পদত্যাগ করা প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেনের সঙ্গে শোকজের চিঠি পেয়েছেন নতুন দু’জন। তারা হলেন– এক মাস আগে পদত্যাগ করা অপারেশন্স ম্যানেজার মিজানুর রহমান এবং প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড স্টোর অফিসার ইমরুল হাসান শরীফ। তাদের সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ ক্রয় প্রক্রিয়ায় অনিয়মের।
সোহাগকে নিষিদ্ধ করার আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের লেনদেন নিয়েই তদন্ত করে ফিফা। এবারের অভিযোগ ২০২২ সালে ঘাস কাটার মেশিন ক্রয় নিয়ে। সেই সময় অভিযুক্ত এ চারজনই ছিলেন ফুটবল ফেডারেশনে নিজেদের চেয়ারে। নিজেদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্ত চললেও তাতে কার্পণ্য করেননি তারা। ফিফার নির্দেশে ক্রয় কমিটি করা হলেও দরপত্র থেকে ক্রয়াদেশ– কোনো ধাপেই মানা হয়নি নিয়ম। এসব কিছু তুলে ধরেই এ চার কর্মকর্তাকে শোকজ করেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বাফুফের কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ, আবু হোসেন, মিজানুর এবং শরীফকে নজরে রেখেছে ফিফা। তাদের অব্যাহতি না দিলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে বলে গুঞ্জন উঠেছে। ফিফার কাছ থেকে এমন নির্দেশনা পেয়েছেন বলে মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, “হ্যাঁ, আমাকে জানিয়েছে। তারা (ফিফা) আমাকে যেটা জানিয়েছে, ‘দেখো, তোমাদের যারা বেতনভুক্ত কর্মকর্তা আছে, তোমরা একটা তদন্ত করে তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করো। আমাদের নজর আছে, তাদের সরাও।’ তাদের সরানো উচিত। আমার মনে হয়, এই মাসের মধ্যে সব বাদ হয়ে যাবে।”
৩০ জুলাই বাফুফের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করার কথা। তার আগে ফিফার এ শোকজ নোটিশ নতুন করে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বাফুফে কর্তাদের।