ভারী বর্ষণের জেরে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৩১ ও পাকিস্তানে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় আল জাজিরা।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফিউল্লাহ রহিমি রোববার বলেছেন, ভারী বৃষ্টির পর গত তিন দিনের বন্যায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই পশ্চিম কাবুল ও ময়দান ওয়ারদাকের বাসিন্দা। এছাড়া বন্যায় আরও ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আল জাজিরা জানায়, মৌসুমী বৃষ্টির জেরে রাজধানী কাবুল, ময়দান ওয়ারদাক এবং গজনি প্রদেশে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, কাবুলের পশ্চিমে অবস্থিত ময়দান ওয়ারদাক প্রদেশের জালরেজ জেলায় দ্রুত বাড়তে থাকা বন্যার পানিতে ঘুমের মধ্যে অন্তত ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি বলেন, এসময় প্রায় ৪০ জন লোক নিখোঁজ হন এবং শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যায়।
ভুক্তভোগীদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় উদ্ধারকারী দলগুলো কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন মুজাহিদ।
প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্যায় শত শত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ মানুষেরা ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বৃষ্টি ও ভূমিধসে ১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়ে আল জাজিরা জানায়, পাকিস্তানে বর্ষা মৌসুম অব্যাহত রয়েছে এবং দেশটির বিভিন্ন অংশে ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসের কারণে ১৩ জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি সংক্রান্ত ঘটনায় নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র তৈমুর খান বলেছেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের কারণে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অন্তত ৭৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুলিশ অফিসার রাজা মির্জা হাসানের মতে, গিলগিট বাল্টিস্তান অঞ্চলের স্কার্দু এলাকায় বিশাল ভূমিধসের ঘটনায় একই পরিবারের চার সদস্য নিহত হয়েছেন। ভূমিধসের সময় তারা তাদের গাড়িতে ছিলেন।
আল জাজিরা বলছে, গত ২৫ জুন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন নারী এবং ৪২ জন শিশু।