গভীর রাতে ফোন বাজল। গেজেল শারমাহদকে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন মা। বললেন, তোমার বাবার জামশিদ শারমাহদ ইরানে কারাগার থেকে ফোন করেছেন।
জামশিদ শারমাহদ একজন ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান ব্যবসায়ী। যার সঙ্গে তার মেয়ে গেজেলকে দুই বছর ধরে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।
গেজেল বলছেন, এমনকি আমরা এটাও জানতাম না যে, বাবাকে ইতিমধ্যেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে কিনা। তারা আমাদের কিছুই জানায়নি। এই ফোনের কয়েক দিন পরে লস অ্যাঞ্জেলেসে তার বাসা থেকে গেজেল এসব কথা বলছিলেন বিবিসির প্রতিবেদককে।
ইরান গত ফেব্রুয়ারিতে জামশিদ শারমাহদকে ‘কথিত’ দুর্নীতির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তার বিচারকে প্রতারণা বলে নিন্দা করেছে।
তার মেয়ে গেজেল বাবার সঙ্গে আবার কথা বলতে পেরে খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তাকে শেষ বিদায় জানানোর জন্য ফোনে কথা বলার এই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এই আশঙ্কায় তিনি মনে কষ্টও পেয়েছেন।
৬৮ বছর বয়সী জামশিদ শারমাহদ তিন বছর ধরে ইরানের নির্জন কারাবাসে রয়েছেন। সমস্ত পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে। এমনকি তাকে তার মৃত্যুদণ্ডের কথাও জানানো হয়নি। এক ঘণ্টার ফোনালাপে গেজেল বিষয়টি টের পেয়েছেন বলে জানান।
এ মাসের প্রথমে গেজেল শারমাহদ জার্মানিতে একটি ফৌজদারি অভিযোগ করেছিলেন। তার বাবার সঙ্গে যে আচরণ করার হয়েছে তাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে ইরানের বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার আটজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জার্মান রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিদের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গেজেল শারমাহ বলেন, অপুষ্টি অথবা নিষ্ঠুর আচরণের কারণে তার বাবা দাঁত হারিয়েছেন। এ কারণে তিনি খেতে পারেন না। এমনকি তিনি ঠিকমতো হাঁটতে বা কথা বলতে পারেন না। কারণ তিনি পারকিনসন্সে ভুগছেন। তাকে ঠিকমতোক ওষুধও দেওয়া হচ্ছে না।