লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হওয়ার পর থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন। গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেক নেতা-কর্মী রাতে বাসায় থাকছেন না। অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলটির নেতারা বলেন, পুলিশ বিএনপিকে আন্দোলনের মাঠ থেকে উঠিয়ে দিতে, হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে।
পুলিশ বলছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা হচ্ছে। গতকাল বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তারা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল ও রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও বিএনপির। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে সজিব হোসেন (৩০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়। তিনি চন্দ্রগঞ্জ থানা কৃষক দলের সদস্য ছিলেন। সজিব চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ধন্যপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
এ ঘটনায় গতকাল রাত ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও অপর দুজন বাদী হয়ে আরও দুটি মামলা করেন। থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের করা মামলা দুটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ওরফে এ্যানিকে প্রধান করে ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ মামলায় অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর, মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়।
অন্যদিকে কৃষক দলের কর্মী সজীব হোসেন হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই সুজন হোসেন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অন্য মামলার বাদী নুরুল আমিন। তাঁর বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গতকাল রাতে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ-পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে, অভিযোগ শহীদ উদ্দিনের
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাছিবুর রহমান জানান, গত দুই দিনে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীর বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ। যাঁদের নামে কোনো মামলা নেই, তাঁদের বাড়িতেও হানা দেওয়া হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।