এরদোয়ান ‘পশ্চিমে’ মুখ ফেরাচ্ছেন কেন

0
140
ভিলনিয়াসে ন্যাটো সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও এরদোয়ানের সাক্ষাৎ।

পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করতে এ সপ্তাহে বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। যে সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার বিরোধিতা করছিলেন, গত সোমবার তিনি আচমকা ঘোষণা করেন, সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে তার দীর্ঘকালের আপত্তি তুলে নিচ্ছেন। তার এই ঘোষণায় তার ন্যাটো মিত্ররা অবাক হয়ে যান। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এই দ্রুত কৌশল পরিবর্তন এমন এক সময়ে ঘটল যখন তিনি তার দেশের দীর্ঘ এবং ক্রমাবনতিশীল অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান খুঁজছেন।

তার এই দিক পরিবর্তন থেকে বোঝা যায়, তুরস্কের নতুন পুননির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এখন পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামত করতে আগ্রহী। তুরস্কের অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য গত কয়েক বছরে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তুরস্ককে পরিত্যাগ করেছিল। এরদোয়ান চাইছেন এই বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে।

এরদোয়ান বলছেন, অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে তুরস্কের যোগদান এবং ভিসা উদারীকরণের ক্ষেত্রে অগ্রগতি– এ দুটি প্রশ্নে ব্রাসেলস এখন ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখাচ্ছে।

এত দ্রুতগতিতে এরদোয়ান তার অবস্থান পরিবর্তন করাকে দেখা হচ্ছে একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত হিসেবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান মিত্রদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন।

ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে এরদোয়ানের ফটো-অপ ছিল অনেকগুলো। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজের সঙ্গে ছবি তুলেছেন তিনি। বেশ কয়েক বছর কিছুটা দূরে দূরে থাকার পর এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এরদোয়ানের সঙ্গে তার বৈঠককে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন।

সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রা লিরার মূল্যমান রেকর্ড পরিমাণ নেমে গেছে। সারা দুনিয়াতেই দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মুল্যস্ফীতি কমানোর জন্য সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান অর্থনীতির এসব গোঁড়ামিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তার কথা হলো, সুদহার বাড়িয়ে দিলে জিনিসপত্রের দাম আরও বেড়ে যাবে। তার পরিবর্তে তিনি তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন, যেন তারা সুদের হার অর্থাৎ ব্যাংক থেকে ঋণ নেবার খরচ কম রাখে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তুরস্কের ৯০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার জন্য অনেক সময় ও ধৈর্য দরকার। এর কোনো চটজলদি সমাধান নেই। তুরস্কের জন্য আরও দরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা।

দেশটির চলতি হিসেব ঘাটতি এ বছর প্রথম পাঁচ মাসে ৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলারে উঠেছে, যা এক নতুন রেকর্ড। এর অর্থ হলো তুরস্ক রপ্তানি পণ্য যতটা বিক্রি করছে– তার চেয়ে অনেক বেশি আমদানির জন্য খরচ করছে। সূত্র: বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.