লেখকদের পর ধর্মঘটে অভিনয়শিল্পীরা

0
149
গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মঘটের খবর শুনেই ‘ওপেনহাইমার’–এর প্রচার থেকে বেরিয়ে আসে পুরো টিম। বাঁ থেকে রামি মালিক ও ম্যাট ডেমনকে দেখা গেছে।

দাবিদাওয়া পূরণ না হলে যে লেখকদের চলমান ধর্মঘটে তাঁরাও যোগ দেবেন, সেটা আগেই জানিয়েছিলেন অভিনয়শিল্পীরা। তবে অভিনয়শিল্পীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ও হলিউড স্টুডিওগুলোর মধ্যে আলোচনা আশার আলো দেখিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হয় আলোচনা। ফল, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ধর্মঘটে গেলেন অভিনয়শিল্পীরাও। কিন্তু কেন এই ধর্মঘট? এর কী প্রভাব পড়বে হলিউডে? এএফপি, ভ্যারাইটি অবলম্বনে সেটাই জেনে নেওয়া যাক।

লেখক ও অভিনয়শিল্পীরা একসঙ্গে কর্মবিরতিতে—৬৩ বছর পর প্রথম দেখছে হলিউড। এই কর্মবিরতির ফলে টেলিভিশন ও সিনেমার সব ধরনের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে।

দ্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড ও আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্টের প্রেসিডেন্ট ফ্র্যান ড্রেসচার সংবাদ সম্মেলনে গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যদি আমরা এখনই একসঙ্গে না দাঁড়াই, সবাই বিপদে পড়ব।’ ইউনিয়নের প্রধান আলোচক ডানকান ক্র্যাবট্রি-আয়ারল্যান্ড বলেছেন, অ্যাক্টরস গিল্ড স্টুডিও ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। অভিনয়শিল্পীরা শেষবার হলিউডে ধর্মঘটে গিয়েছিল ১৯৮০ সালে। সেবার তিন মাসের বেশি স্থায়ী হয় কর্মবিরতি। দ্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড ১ লাখ ৬০ হাজার অভিনয়শিল্পীর সংগঠন। এতে আছেন মেরিল স্ট্রিপ, জেনিফার লরেন্সের মতো প্রথম সারির শিল্পীরা।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে অভিনয়শিল্পীদের ধর্মঘটের কথা যখন প্রকাশ্যে আসে, লন্ডনে তখন চলছিল ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার প্রচার। কর্মবিরতির কথা জানামাত্রই সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান কিলিয়ান মার্ফি, এমিলি ব্লান্ট, রামি মালিক, ম্যাট ডেমনের মতো তারকারা। ছবিটির রেড কার্পেটে ব্রিটিশ অভিনেতা ও পরিচালক কেনেথ ব্রানা বলেন, ‘সবাই জানি, এটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। এর সমাধানে যা যা দরকার, তা খতিয়ে দেখা উচিত।’

বেতন কমানো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হওয়া হুমকির কারণে গত ২ মে থেকে ধর্মঘটে আছেন লেখকেরা
বেতন কমানো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হওয়া হুমকির কারণে গত ২ মে থেকে ধর্মঘটে আছেন

এদিকে কর্মবিরতি ঘোষণার পর সদস্যদের জন্য করণীয় ঠিক করে দিয়েছে দ্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড ও আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্ট। এতে বলা হয়েছে, সংগঠনের সদস্যরা ছবির প্রিমিয়ারে যেতে পারবেন না; কাজ নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না এবং চলচ্চিত্র উৎসব, অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যাওয়ার ওপরও নিষেধজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবির প্রচারও করা যাবে না। গ্রীষ্মকালে হলিউডে বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি পায়। গত সপ্তাহেই মুক্তি পেয়েছে ‘মিশন: ইমপসিবল ৭’, ২২ জুলাই মুক্তি পাবে ‘ওপেনহাইমার’ ও ‘বার্বি’। অভিনয়শিল্পীদের সংগঠনের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে সিনেমাগুলোর প্রচার ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বেতন কমানো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হওয়া হুমকির কারণে গত ২ মে থেকে ধর্মঘটে আছেন লেখকেরা। বড় স্টুডিওগুলোর কাছ থেকে বেশি পারিশ্রমিক চেয়ে একটা চুক্তি করতে চেয়েছিল লেখকদের সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা (ডব্লিউজিএ)। সেই চুক্তির চেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতেই এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন লেখকেরা। তাঁদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোম্পানিগুলো লেখকদের পেছনে ব্যয় কমাতে এখন স্ট্রিমিং সার্ভিসের দিকে ঝুঁকেছে। ফলে তাঁদের জন্য কাজের পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে পড়েছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.