মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে ৫৮২ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ হাজার মেট্রিক টন সরকারি সার আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশন (বিসিআইসি)। হাইকোর্টে সংস্থাটির দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
পরে এ বিষয়ে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে দুদককে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন রায়েরও দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
প্রতিবেদনে অনুযায়ী, সাবেক এমপির মালিকানাধীন মেসার্স পোটন ট্রেডার্স কর্তৃক (২০২১-২০২২) অর্থ বছরে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) বিভিন্ন বাফার গুদামে সরবরাহ না করা মোট সারের পরিমাণ ছিলো ৭১ হাজার ৮০১ মেট্টিক টন। আত্মসাত করা এই সারের ক্রয়মূল্য ছিলো ৫৫৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এই ক্রয়মূল্যের সঙ্গে অন্যান্য খরচ যোগ করা হলে বিসিআইসি তথা সরকারের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
‘পোটনের পেটে ৫৮২ কোটি টাকার সার’ শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা। পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।
এই সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসিকে ব্যাখ্যা দিতে গত ৫ জুন নির্দেশ দেন হাই কোর্ট। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষিত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পাশাপাশি দুদককে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় আদালত। দুদক কৌসুলি জানিয়েছেন, সার আত্মসাতের ঘটনা অনুসন্ধান করছে কমিশন।