ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩০ নভেম্বর ঠিক করেছেন আদালত।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত আজ মঙ্গলবার এই দিন ঠিক করেন।
খাদিজাতুল কুবরার আইনজীবী ইয়াসির আরাফাত খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে খাদিজাতুল কুবরাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর পক্ষে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী।
লিখিতভাবে বলা হয়, খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়। হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। বিষয়টি আপিল বিভাগেই বিচারাধীন রয়েছে।
খাদিজাতুল কুবরার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আজ এই আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় করা খাদিজার আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন আগামী ৩০ নভেম্বর।
দুই মামলায় খাদিজাতুল কুবরার জামিন প্রশ্নে আবেদন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলছেন, এর ফলে এই সময় পর্যন্ত (চার মাস) খাদিজাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত থাকছে।
আদালত ও আইনজীবী সূত্রের তথ্যমতে, বিচারিক আদালতে দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। অন্যদিকে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজা আবেদন করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের সঙ্গে গতকাল আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে।
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ। গত বছরের মে মাসে দুই মামলায়ই দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত বছরের ২৭ আগস্ট খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। অপর আসামি দেলোয়ার বিদেশে আছেন।