কী ঘটেছে প্রিগোজিনের ভাগ্যে

0
196

ইউক্রেন যুদ্ধে ভাড়ায় খাটা সশস্ত্র গ্রুপ ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, বিদ্রোহের পর টানা দুই সপ্তাহ বেলারুশে আত্মগোপনে থেকে রাশিয়ায় ফিরেছেন প্রিগোজিন। তবে রাশিয়ায় তাঁর পরিণতি কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। খবর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, স্কাইনিউজ ও নিউইয়র্ক পোস্টের।

গত ২৩ জুন রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডনে গুরুত্বপূর্ণ একটি সেনা সদরদপ্তর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় হঠাৎ বিদ্রোহ থামিয়ে প্রিগোজিন পালিয়ে যান পার্শ্ববর্তী বেলারুশে।

লুকাশেঙ্কো বলেছেন, সেখান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও রাশিয়ায় ফেরেন তিনি। কিন্তু ওই বিদ্রোহের দায়ে এখন প্রিগোজিনের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে– এ নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। কারণ, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে এটিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ ও ‘পেছন থেকে ছুরিকাঘাত’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন রুশ নেতা। তবে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর ধারণা, প্রিগোজিনকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করবেন না পুতিন।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রিগোজিনকে স্বাভাবিকভাবে মস্কোতে ফেরালে এটি অমীমাংসিত বিষয় হতে চলেছে। ওয়াগনার বসের অবস্থান সম্পর্কে বেলারুশের নেতা গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রিগোজিন সেন্ট পিটার্সবার্গ অথবা মস্কো কিংবা অন্য কোথাও থাকতে পারেন। তবে তিনি বেলারুশের ভূখণ্ডে নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রিগোজিন এখন একদম মুক্ত। ওয়াগনার সেনারা বিদ্রোহের আগে যেখানে ছিল, সেই ক্যাম্পেই এখন থাকবে বলেও জানান তিনি।

লুকাশেঙ্কো নিশ্চিত করেন, ক্রেমলিন ও প্রিগোজিনের মধ্যে বেলারুশের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে বিদ্রোহের অবসান ঘটে এবং এরপর প্রিগোজিন বেলারুশেই ছিলেন।

এদিকে প্রিগোজিনকে সেন্ট পিটার্সবার্গে দেখা গেছে বলে দাবি করেছে দেশটির মিডিয়া। এ বিষয়ে স্কাইনিউজের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পাদক ডেবোরাহ হেইনস বলেন, যদি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সত্য হয়, তবে তা ‘অমীমাংসিত সমস্যার’ কথা নির্দেশ করে। কারণ ২০ বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা রুশ প্রেসিডেন্টকে চরম হুমকির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁর জন্য। প্রিগোজিনকে মস্কোতে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে না– এমনটা হলে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। অবশ্য পুতিন কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও বিদ্রোহ বন্ধের পর ক্রেমলিন জানায়, প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে সব ফৌজদারি অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে এবং ওয়াগনার যোদ্ধাদের বিচার করা হবে না।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর বেশ কিছু সাফল্য এসেছে গ্রুপটির হাত ধরে। টানা কয়েক মাস যুদ্ধের পর পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর দখলে সহায়তা করে ওয়াগনার। কিন্তু রুশ সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিদ্রোহে নামে ভাড়াটে এই বাহিনী।

বিদ্রোহের পর বাজেয়াপ্ত করা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সংগ্রহের জন্য দেশে ফেরার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রিগোজিনকে। এমন খবর দিয়েছে রুশ গণমাধ্যম ফুনটাকা।

এদিকে পশ্চিম ইউক্রেনের শহর লভিভের একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে ভয়াবহ রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ভবনটির তৃতীয় ও চতুর্থ তলা একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। আটকে পড়াদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মিত্ররা দেরিতে অস্ত্র সরবরাহ করায় কিয়েভের পরিকল্পিত পাল্টা হামলায় বিলম্ব হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.