মরিচের ঝাঁজ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিল শুরু আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। ‘ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে’ এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মরিচের অনেক দাম বেড়েছে। কত, এক হাজার টাকা- তাই না। মরিচের তো খুব ঝাঁজ থাকে। ওই ঝাঁজ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারছেন না। আজকে চাল, ডাল তেল, লবণসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আজ এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি মরিচ কেনে মানুষ। আর উনি ভয় পেয়েছেন, এই অবৈধ সরকার নিয়ে উনি আর কতদিন প্রধানমন্ত্রীত্ব করতে পারবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাই কথা খুব পরিষ্কার, অবিলম্বে পদত্যাগ করেন। কারণ যত দিন যাবে, ততই দেশ ও মানুষের ক্ষতি হবে। ততই গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই বলেন না কেনো, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দেন। তারা একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন করবে। এটাই একমাত্র পথ, আর কোনো পথ নেই। তা না হলে সালাম সাহেব যেটা বলেছেন, তখন পালানোর পথও খুঁজে পাবেন না। কারণ সময় আর থাকবে না, শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই- আপনি আসুন, দেখুন, এই সাধারণ শ্রমিক, কৃষকরা কী বলেন। আর শুধু কাঁচা মরিচ না বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানিসহ সবকিছুর দাম আপনারা বাড়িয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি- আপনাকে আর প্রয়োজন নেই। গত ১৪-১৫ বছর ধরে আপনার এই দল নিয়ে এ দেশকে যেভাবে শাসন করছেন- যেভাবে বাংলাদেশের সম্পদকে লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন, যেভাবে রাজনৈতিক কর্মীদেরকে হত্যা করেছেন, যেভাবে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছেন, আমাদের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন- তাতে কি আন্দোলন ঠেকানো যাচ্ছে?
সমাবেশ শেষে বিকেল সোয়া ৫টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শান্তিনগর হয়ে আবারও দলের অফিসের সম্মুখীনে এসে শেষ হয়।
এদিন সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল ৩টা থেকে বিক্ষোভ মিছিল অংশ নিতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আসেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলের আগের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।