জন্ম নিতে না নিতেই মাকে নিয়ে পরলোকে নবজাতক

0
213
লাশ

প্রসবব্যথা নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা শারমিন আখতার (২৭) হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁকে বহনকারী অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয় একটি গাড়ি। গাড়িটি অটোরিকশাকে টেনে অনেক দূরে নিয়ে যায়। এ সময় সড়কে ছিটকে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা। সেখানেই একটি মেয়ে নবজাতকের জন্ম হয়। পরে মা ও নবজাতককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে নীলফামারী জেলা সদরের শিমুলতলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার আজ সোমবার বলেন, অন্তঃসত্ত্বা শারমিন সৈয়দপুর উপজেলার মতির মোড় এলাকার রেজাউল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি ডোমার পৌরসভার চিকনমাটি কাচারিপাড়ায়। সন্তানের জন্ম উপলক্ষে তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন। গত শনিবার রাতে তাঁর প্রসবব্যথা উঠলে তাঁকে সৈয়দপুরের হাসপাতালে নিয়ে রওনা হন মা কহিনূর বেগম ও খালাতো ভাই আসাদুল ইসলাম। এ সময় শারমিনের চার বছরের মেয়ে ইলমা মণি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পথে শিমুলতলী এলাকায় তাঁদের বহনকারী অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয় একটি মাইক্রোবাস। মাইক্রোবাসটি অটোরিকশাকে টেনে নেওয়ার সময় ছিটকে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা। সেখানেই সন্তানের জন্ম হয়। পরে তাঁদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

শারমিনের পরিবার জানায়, দুর্ঘটনায় আহত হন অন্তঃসত্ত্বা শারমিনের মা কহিনূর, মেয়ে ইলমা ও খালাতো ভাই আসাদুল।

অন্তঃসত্ত্বার খালাত ভাই আসাদুল ইসলাম আজ বলেন, বোনকে নিয়ে তাঁরা সৈয়দপুরে যাওয়ার পথে তাঁদের বহনকারী অটোরিকশাটি একটি রিকশাভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে তাঁদের অটোরিকশাটি উল্টে যায়। ওই অবস্থায় একটি গাড়ি তাঁদের অটোরিকশাকে টেনে অনেকটা পথ টেনে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

শারমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শারমিনের স্বামী রেজাউল ইসলাম সৈয়দপুর শহরে দর্জির কাজ করেন। তাঁদের ইলমা মণি নামের চার বছরের একটি মেয়ে আছে। দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম ঘিরে পরিবারটিতে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না।

শারমিনের বাবা নাজিম উদ্দীন বলেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শারমিন ও নবজাতকের লাশ চিকনমাটি কাচারিপাড়ার গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নীলফামারী সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। যে মাইক্রোবাস আঘাত করেছে, সেটি শনাক্ত করে চালককে ধরতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.