আবারও সীমানাদেয়ালে ধস

0
100
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরের নির্মাণাধীন সীমানা দেয়ালধসে পড়েছে। গত শনিবার তোলা ছবি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দরের আবাসিক ভবন এলাকার সীমানাদেয়ালের নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই আবারও ধসে পড়েছে। পশ্চিম পাশ থেকে দুটি দেয়াল পুরোপুরি ধসে পড়েছে এবং দুটি দেয়ালের কিছু অংশ হেলে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিটি দেয়াল ১০০ ফুটের মতো হবে। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি আবাসিক এলাকার উত্তর দিকের একটি সীমানাদেয়াল ধসে পড়েছিল।

ছয় মাসের ব্যবধানে আবারও সীমানাদেয়াল হেলে পড়ার ঘটনায় বন্দরের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার রাতে পশ্চিম দিকের সীমানাদেয়াল হঠাৎ করে ধসে পশ্চিম দিকে পড়ে যায়। এরপর গত শুক্রবার দুপুরের সময় পশ্চিম দিকের আরও দুটি দেয়াল পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে। এর পেছনের অংশে রয়েছে ছআনি খাল।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, দেয়াল হেলে খালের দিকেই পড়েছে। এ অংশে নির্মাণাধীন সীমানাদেয়ালের অপর অংশও বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বন্দরের প্রশাসনিক ভবন এলাকার সামনে ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সেখানে কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন, মসজিদসহ বেশ কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর চারপাশেই সীমানাদেয়াল নির্মাণ করার কাজ চলছে। সীমানাদেয়াল, ডরমিটরি ভবন এলাকার বালু ভরাটসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এবিএম ওয়াটার কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ বাস্তবায়ন করছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মূলত যেখান থেকে সীমানাদেয়ালটি টানা হয়েছে, তার উত্তর ও পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছআনি খাল। এ খালটি পূর্ব দিকের টিয়াখালী দোন নদী থেকে উঠে এসেছে। এ খালের তীর ঘেঁষে সীমানাদেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। খালের তীরভূমি থেকে ১০ থেকে ১৫ ফুট জায়গা রেখে যদি সীমানাদেয়ালটি টানা হতো, তাহলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত না, তা ছাড়া সীমানাদেয়ালের ভেতরের দিকে বাল্কহেড দিয়ে বালু ভরাট করা হয়েছে। দেয়ালটির ভেতরের অংশ বালু ফেলে উঁচু করা হলেও বাইরের অংশ নিচুই ছিল। বালুর ভেতরের পানি সীমানাদেয়ালের নিচ থেকে ধীরে ধীরে নামার কারণে এবং ভেতরের দিকের বালুর চাপে দেয়ালটি পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে।

সীমানাদেয়াল হেলে পড়ার ঘটনায় বক্তব্য জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবিএম ওয়াটার কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এ বিষয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘যে দেয়াল দুটি পুরোপুরি ধসে পড়েছে, সেগুলো আমরা ভেঙে ঝুঁকিমুক্ত করব। আর যে দেয়ালটি হালকা হেলে পড়েছে, তা আরও দু-এক দিন দেখব। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আমরা নেব।’ তবে দেয়াল ধস বা হেলে পড়ার ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে গত এক সপ্তাহে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি নির্মাণাধীন দেয়ালের ভেতরের অংশে আটকে গেছে। পানি নামতে পারছে না, যার ফলে পানির প্রবল চাপে বালু সরে গিয়ে দেয়াল হেলে বা ধসে পড়েছে।’

পায়রা বন্দর

বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম দিকের সীমানাদেয়াল হঠাৎ করে ধসে পশ্চিম দিকে পড়ে যায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.