যে ১০টি জিনিস ফেসবুকে পোস্ট করলে পস্তাতে হবে

0
205

শিশুদের তো ফেসবুক ব্যবহার করার নিয়মই নেই। তোমার বয়স কমপক্ষে ১৩ না হলে তো ফেসবুকে অ্যাকাউন্টই রাখতে পারবে না। যদি তোমার বয়স ১৩+ হয়ে থাকে এবং তোমার ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তাহলে এই লেখা তোমার জন্য।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১০টা জিনিস কখনো প্রকাশ করতে নেই

১. বেড়াতে যাওয়া: ধরো, তুমি লিখলে, পরিবারের সবাই মিলে বেড়াতে যাচ্ছি কক্সবাজারে বা কলকাতায় বা ব্যাংককে। প্লেনের টিকেটের ছবি দিলে বা এয়ারপোর্ট থেকে ছবি দিলে। পুরো পরিবারের ছবি দিলে বিদেশের কোনো পর্যটনস্থল থেকে।
এতে কী হতে পারে? তোমাদের বাড়িতে চোর আসতে পারে। গ্রিল কাটা চোরেরা সব সময় তক্কে তক্কে থাকে, কোন ফ্ল্যাটে আলো জ্বলে না, কোন ফ্ল্যাটে লোক থাকে না, তা চোরেরা লক্ষ করে। তোমার বেড়াতে যাওয়ার ছবি দেখে কেউ তোমার বাড়িকে চুরির জন্য টার্গেট বানাচ্ছে না, তুমি কি নিশ্চিত? নিশ্চিত হলে নিশ্চিন্তে ছবি দাও, তা না হলে দুবার ভাবো।

২. অবস্থান জানানো: ফেসবুকে কোনো কিছু শেয়ার করার আগে জেনে–বুঝে নাও, তোমার অবস্থান প্রকাশিত হয়ে পড়ছে কি না। লোকেশন শেয়ারিং অপশন বন্ধ করে নাও।

৩. ব্যক্তিগত তথ্য: ফেসবুকে সঠিক জন্মতারিখ, প্রথম স্কুল, এ জাতীয় তথ্য প্রকাশ করতে হয় না। পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স কখনো প্রকাশ করতে নেই। এসব তথ্য দিয়ে তোমার ক্রেডিট কার্ড হ্যাক হতে পারে, তোমার নানা ধরনের অ্যাকাউন্টও চুরি হয়ে যেতে পারে।
ফেসবুকে অনেক রকম খেলা আসে। যেমন আপনি দেখতে কোন তারকার মতো! এগুলোতে যাবে না। এগুলো তোমার অনেক তথ্য চুরি করে।

৪. ফেসবুক তোমার অভিযোগ প্রকাশ করার জায়গা নয়। অনেক সময় আমরা বসের ওপর, পরিবারের সদস্যের ওপর বা কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর রাগ করি। ক্ষিপ্ত হই। এটা প্রকাশ করার জায়গা ফেসবুক নয়। বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে, এটা সবাইকে জানাতে হবে না।

৫. মনে রাখবে, কর্তৃপক্ষ ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজর রাখে। ধরা যাক, তুমি একটা স্কুলের দুর্নাম করলে, কয়েক দিন পর সেই স্কুলে গেলে ভর্তি হতে। কোনো দেশের দুর্নাম করলে, কদিন পর সেই দেশের ভিসার জন্য আবেদন করলে। তখন কিন্তু তোমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘেঁটে দেখা হবে।
একইভাবে কোনো অকাজ করেছ, ধরা যাক, পড়শির আমগাছ থেকে আম চুরি করেছ, এটা কখনোই ফেসবুকে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেবে না। প্রথম কথা, চুরি করবে না। দ্বিতীয় কথা, এটার কথা ফলাও করে প্রকাশ করার কী হলো! নিজেকে বরং শোধরাও।

৬. দামি জিনিস কিনে তার ছবি দেবে না। বা ধরো, তুমি একটা দামি উপহার পেলে, একটা ল্যাপটপ, একটা মুঠোফোন—এর ছবি প্রকাশ করবে না। এটা অন্যের মনঃকষ্টের কারণ হয়। তোমার জিনিসটা কেউ চুরি করারও পণ করতে পারে। আবার কেউ এসে টাকা ধার চাইতে পারে। আবার কেউ বা ভাবতে পারে, তুমি হলে দেখনদার। দেখিয়ে বেড়াও। ফুটানি দেখাও। সেটাও তো ভালো কথা নয়।

৭. দান করার আহ্বান শেয়ার করা। কারও রক্ত লাগবে, কারও বা চিকিৎসার টাকা দরকার, এমন পোস্ট দেখলেই আমরা শেয়ার করি। কিন্তু শেয়ার করার আগে দুইবার ভাবা উচিত, খোঁজ নেওয়া উচিত। জগৎটা প্রতারকে ভরা। আমরা হয়তো প্রতারকের পাল্লায় নিজে পড়ছি, অন্যকেও ফেলতে চেষ্টা করছি।

৮. কাউকে ফেসবুকে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান দেবে না। ধরো, কেউ বলল, গা ম্যাজ ম্যাজ করছে, কী করব? বা পকেট মার হয়েছে, কী করা উচিত? তুমি চিকিৎসক নও, তুমি উকিল নও, তুমি কোনো উপদেশ দিতে যাবে না।

৯. ধরা যাক, তুমি এমন একটা তথ্য জানো, যেটা কদিন পরে প্রকাশিত হবে। বিশেষ কারণে তুমি জেনে গেছ, এটা তুমি আগেভাগে প্রকাশ করবে না। যেমন ধরো, তুমি ক্লাসের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছ। ফলাফলের আগে শিক্ষক তোমাকে বলেছেন এবং অন্যদের বলতে নিষেধ করেছেন। এটা তুমি আগেভাগে প্রকাশ করবে না। ধরো, তুমি স্কাউট বা গার্লস গাইড করো। তোমাদের স্কুলে কোনো একটা প্রতিযোগিতায় কে কে জিতল, তুমি আগেই জেনে গেছ সংগঠনের নেতা হিসেবে। এটা তুমি আগেই প্রকাশ করতে পারো না।

১০. যা তোমার মা–বাবাকে দেখাতে পারবে না, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশ কোরো না। এমনকি ইনবক্স বার্তা হিসেবেও প্রকাশ করবে না। মনে রেখো, ফেসবুক হ্যাক করা হ্যাকারদের জন্য খুবই সহজ একটা ব্যাপার।

[মেক ইউজ অব সাইট অবলম্বনে। মূল রচনা: বেন স্টিগনার। মুক্ত রূপান্তর]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.