ভাগনারের প্রধান প্রিগোশিন এখন কোথায়

0
188
ইয়েভগেনি প্রিগোশিনকে সর্বশেষ একটি গাড়িতে করে দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ–অন–দন শহর ত্যাগ করতে দেখা যায়, ছবি: রয়টার্স

মস্কো অভিমুখে অভিযান বন্ধের ঘোষণার পর বেলারুশে যেতে রাজি হন ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। তাঁর যোদ্ধারাও নিয়ন্ত্রণে নেওয়া শহরগুলো ছেড়ে যেতে শুরু করে শনিবার থেকেই। তবে প্রশ্ন উঠেছে, প্রিগোশিন এখন কোথায় আছেন?

রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন প্রিগোশিন। পথে বেশ কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ভাগনার। পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় শনিবার রাতে অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন তিনি।

বিদ্রোহ ঘোষণার পর ভাগনার প্রথম সীমান্তবর্তী শহর রোস্তভ–অন–দন দখল করে নেয়। গতকাল সর্বশেষ প্রিগোশিনকে একটি গাড়িতে করে শহরটি ছাড়তে দেখা যায়। এ সময় তাঁকে বেশ হাসিখুশি দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে হাত নাড়ছিলেন তিনি।

ক্রেমলিনের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী প্রিগোশিনের পরবর্তী গন্তব্য বেলারুশ। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে, রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা রয়েছে। এর অর্থ রোস্তভের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দরগুলো রয়েছে রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ ও সোচি শহরে। তবে দুটি বিমানবন্দরই রোস্তভ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। এ ক্ষেত্রে প্রিগোশিনকে হয়তো গাড়ি বা ট্রেনে করে বেলারুশে নেওয়া হতে পারে। সে জন্য তাঁকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, প্রিগোশিন এত দিন রাশিয়ার যেসব জেনারেলের সঙ্গে মিলে যুদ্ধ করেছেন, হয়তো তাঁদের সমর্থন পাবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি না হওয়ায় তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে।

এদিকে শনিবার প্রিগোশিনের অভিযান বন্ধের ঘোষণার পরপরই রোস্তভ শহর ছেড়ে যেতে দেখা যায় ভাগনার যোদ্ধাদের। রোববার নিজেদের দখলে থাকা ভেরোনেশ ও লিপেৎস্ক শহরও ত্যাগ করেন তাঁরা। সমঝোতার পর প্রিগোশিন ও ভাগনার যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ক্রেমলিন। ভাগনারের যোদ্ধারা রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে গিয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।

ভাগনার যোদ্ধারা ফেরার পর রোববার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে চলাচলের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে রাজধানী মস্কোয় জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। আগের দিনের মতো রোববারও বন্ধ রাখা হয়েছিল রেড স্কয়ার। ঝুঁকি এড়াতে সোমবার মস্কোয় ছুটি ঘোষণা রয়েছে।

ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের এ বিদ্রোহ অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হলেও এর মধ্য দিয়ে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রকাশিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিবিএস নিউজের টক শো ‘ফেস দ্য নেশনে’ অংশ নিয়ে তিনি বলেন, প্রিগোশিনের বিদ্রোহ সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্তৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছিল। সে কারণে এই বিদ্রোহ বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে। এটা পুতিনের কর্তৃত্বে যে ফাটল রয়েছে, তা তুলে ধরেছে।

অপরদিকে এই ঘটনাকে রাশিয়ার ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ উল্লেখ করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, জাতীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাশিয়ার প্রতি চীনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.