অ্যামাজন ডটকম ইনকরপোরেশন ভারতে অতিরিক্ত ১৫ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি জেসি। গত শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সূত্রে এই খবর দিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
জেসি বলেন, এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে অ্যামাজনের মোট বিনিয়োগ ২৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।
বৈঠকে মোদি ও জেসি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা ভারতে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান, নতুন কর্মসংস্থান, রপ্তানি বৃদ্ধি, ডিজিটালাইজেশন, ক্ষমতায়ন ও বিশ্ববাজারে ক্ষুদ্রশিল্পের প্রতিযোগিতা করার বিষয়গুলো নিয়েও কথাবার্তা বলেছেন।
গত মাসে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ভারতে ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। সেই বিনিয়োগও ২০৩০ সালের মধ্যে হওয়ার কথা।
এদিকে শুধু শুধু অ্যামাজন নয়, গুগলও ভারতে বড় বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, ভারতের ডিজিটাল খাতে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে তারা। এবার গুজরাটে গ্লোবাল ফিনটেক অপারেশন সেন্টার খোলা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ হয়েছে। সফরের শেষ দিনে মোদি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন অ্যাপলের টিম কুক, গুগলের সুন্দর পিচাই, মাইক্রোসফটের সত্য নাদেলা। মোদি সেখানে তাঁদের প্রতি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
এদিকে মাইক্রোসফট গত মাসে ভারতে যুগলবন্দী নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নির্ভর নতুন প্রজন্মের চ্যাটবট চালু করেছে। এই চ্যাটবট মুঠোফোনে চলবে, এমনকি তা ভারতের সরকারি কাজেও সাহায্য করবে। এই চ্যাটবটের বিশেষত্ব হলো, কেউ আঞ্চলিক ভাষায় লিখে বা মুখে বলে প্রশ্ন করলে এই চ্যাটবট ইংরেজিতে লেখা তথ্য খুঁজে আঞ্চলিক ভাষাতেই উত্তর দেবে।
অ্যামাজন, মাইক্রোসফটের বিনিয়োগ ঘোষণার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে সেমি কনডাক্টর বা চিপ, মহাকাশ প্রযুক্তি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, টেলিযোগাযোগ ও যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন নির্মাণ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার কথা ঘোষিত হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিক ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকসকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ভারতেই জেট ইঞ্জিন তৈরিতে সহযোগিতা করবে। যৌথ উদ্যোগে এটি করা হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের গণমাধ্যমগুলো বলছে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন চালিকাশক্তি হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত বড় হবে।