জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম ওরফে বাবু। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে জামালপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হাসিব উল্লাহ পিয়াস তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জামালপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরমান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ মামলার প্রধান আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে এখনই ওই তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আসামি রেজাউল করিম ও মো. মনিরুজ্জামান জামালপুরের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তানভীর আহমেদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ আসামির মধ্যে গত তিন দিনে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মাহমুদুল আলম বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান। তিনি সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগ তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। তিনি সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার প্রধান আসামি।
সাংবাদিক রব্বানির ওপর হামলার পর আত্মগোপনে চলে যান মাহমুদুল আলম। গত শনিবার ভোরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের চর তিস্তাপাড়া এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যায় র্যাবের একটি দল। পরে সাংবাদিক রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগমের দায়ের করা হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায়। ওই দিনই আদালত তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে আজ তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফেরার পথে পথে বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় মাহমুদুলের নেতৃত্বে সাংবাদিক গোলাম রব্বানির ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি ও বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরের দিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। গোলাম রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করতেন।