এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে শাপলুডু খেলা শেষই হচ্ছে না। ভারত একদিকে তো পাকিস্তান অন্যদিকে। দেশ দুটির রাজনৈতিক টানাপোড়েন ছয় জাতির এ টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বলছে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ খেলবে না। এককভাবে নিজেদের দেশে আয়োজন করতে চায় পুরো টুর্নামেন্ট। অথচ হাইব্রিড মডেলের উৎপত্তি পিসিবি থেকে।
ভারত পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি না হওয়ায় পিসিবির চেয়ারম্যান নাজাম শেঠী হাইব্রিড মডেলে খেলার বিষয়টি সামনে আনেন। এসিসিও সেভাবে শ্রীলঙ্কাকে মূল ভেন্যু করে পাকিস্তানে চারটি ম্যাচ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৭ জুন এক বিজ্ঞপ্তিতে এসিসি জানায়, ৩১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবারের ওয়ানডে এশিয়া কাপ।
টুর্নামেন্টের ফাইনালসহ ৯টি ম্যাচ খেলা হবে শ্রীলঙ্কায়। এতেই বেকে বসে পাকিস্তান সরকার। পিসিবির চেয়ারম্যানের পদেও রদবদলের সিদ্ধান্ত নেয়। নাজাম শেঠীকে সরিয়ে জাকা আশরাফকে চেয়ারম্যান করার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। গতকাল বিসিবির একজন পরিচালক জানান, পাকিস্তানকে ছাড়াই এশিয়া কাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে এসিসি।
টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বার্থে নাজাম শেঠী কিছুটা নমনীয় ছিলেন। বিশ্বকাপে দল পাঠাতেও রাজি ছিলেন তিনি। পিসিবি চেয়ারম্যানের এ সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি দেশটির সরকার। তারা ভারতের কাছ থেকে ২০২৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার লিখিত নিশ্চয়তা না পাওয়ায় এশিয়া কাপ এককভাবে পাকিস্তানে আয়োজনের দাবি তুলেছে।
এসিসির সদস্য দেশগুলোকেও নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা। পিসিবির এমন দ্বৈত নীতিতে ক্ষিপ্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তানের কারণে বিশ্বকাপের সূচিও চূড়ান্ত করতে পারছে না তারা। এ পরিস্থিতিতে এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত মনে করা হচ্ছে।
বিসিবির প্রভাবশালী ওই পরিচালক বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানের মত পরিবর্তন করা ঠিক হয়নি। ভারত শেষ চেষ্টা করবে পাকিস্তানকে হাইব্রিড মডেল মেনে নিতে। তারা রাজি না হলে পাঁচ দল নিয়ে হবে এশিয়া কাপ। প্রয়োজনে বাছাই টুর্নামেন্টের রানার্সআপ দল নিয়ে খেলা হবে এবং সেটি হবে শ্রীলঙ্কায়। ভারতে গিয়ে বিশ্বকাপ খেলতেও আপত্তি পাকিস্তানের। বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বার্থে আইসিসিও কঠোর হতে পারে।’
আরব আমিরাতে খেলা নিয়ে আপত্তি জানানো ছাড়া এশিয়া কাপ ইস্যুতে বিরোধিতা করেনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশও পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে রাজি ছিল। কিন্তু ভারতের সিদ্ধান্তে বেশিরভাগ ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় রাখা হয়েছে। পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতেই হাইব্রিড মডেলে শ্রীলঙ্কাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মাত্র চারটি ম্যাচ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ পিসিবি। এটাকে নাজাম শেঠীর কূটনৈতিক ব্যর্থতা মনে করছে দেশটির সরকার। তাই চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি হাইব্রিড মডেলকেও প্রত্যাখ্যান করছে তারা।