আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী পর্যটকদের নিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন বা ডুবোযান টাইটানে পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) এবং তাঁর ১৯ বছর বয়সি ছেলে সুলেমান দাউদ।
২১ ফুট দৈর্ঘ্যের নিখোঁজ ডুবোযান টাইটানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওশানগেট এক্সপেডিশন্সের সিইও স্টকশন রাশ চালক হিসেবে পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন। বাকি দুজনের একজন ব্রিটিশ উড়োজাহাজ ব্যবসায়ী হ্যামিশ হার্ডিং আর অপরজন হলেন ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি পল-হেনরি নারজিওলেট।
পাকিস্তানের সার প্রস্তুতকারী বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এনগ্রো করপোরেশনের মালিক পরিবারের সদস্য শাহজাদা দাউদ। যুক্তরাজ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের সারবিটনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন তিনি। আটলান্টিকে অভিযানে নামার মাস খানেক আগে পরিবার নিয়ে কানাডায় যান শাহজাদা দাউদ। পারিবারিক প্রতিষ্ঠান দাউদ ফাউন্ডেশন এবং ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসইটিআই ইনস্টিটিউটের সঙ্গেও কাজ করতেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লস প্রতিষ্ঠিত দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট ও প্রিন্স’স ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনালের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন শাহজাদা দাউদ। নিখোঁজের পর এদের উদ্ধার তৎপরতার সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন যুক্তরাজ্যের রাজা চার্লস।
দাউদ পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা শাহজাদা দাউদ জাতিসংঘ এবং অক্সফোর্ড ইউনিয়নে বক্তৃতা করেছিলেন শাহজাদা দাউদ। ছেলে সুলেমান দাউদ সায়েন্স ফিকশনের পোকা ছিলেন, পছন্দ করতেন নতুন নতুন বিষয়াশয় জানতে ও শিখতে।
ধনাঢ্য চার পর্যটককে নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে মহাসাগরে নেমে রোববার নিখোঁজ হয় সাবমার্সিবল ডুবোযান টাইটান। এদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে। বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে ৬টার দিকে তাদের অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
টাইটানের যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং। দুবাইভিত্তিক ব্যবসা তাঁর। ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের ডিলার হিসেবে কাজ করেন তিনি। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালেই তিনি উড়োজাহাজ ব্যবসার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ব্যক্তি জীবনে ঘুরতে পছন্দ করা হ্যামিশ হার্ডিংয়ের ঝুলিতে রয়েছে তিন তিনটি গিনেস রেকর্ড।
টাইটানের অপর যাত্রী ৭৭ বছর বয়সি পল-হেনরি নারজিওলেট ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়ার দুই বছর পরই সমুদ্র তলদেশে গিয়ে তা দেখে আসেন এই ফরাসি। এরপরও টাইটানিকের টানে সমুদ্র তলদেশে গিয়েছেন পল-হেনরি নারজিওলেট। যাত্রীদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় ওখানে কাটিয়েছেন।
পল-হেনরি নারজিওলেট টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের স্বত্ব কিনে নেওয়া কোম্পানিতে সমুদ্র তলদেশ গবেষণা বিষয়ক ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন। তাঁকে মিস্টার টাইটানিক হিসেবে ডাকা হয়। টাইটানিক থেকে বহু শিল্পকর্ম ও আসবাবপত্র উদ্ধারের কাজ তদারকিও করেছেন।