ভারতে বিশ্বকাপ বয়কট করুক পাকিস্তান, এটাই চান জাভেদ মিয়াঁদাদ

0
245
পাকিস্তানের কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ

ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বৈরিতার শুরুটা হয়েছিল এশিয়া কাপ ঘিরে। এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই ‘না’ বলে আসছিল ভারত। পাকিস্তানও ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে না যাওয়ার পাল্টা হুমকি দেয়।

শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রস্তাব মেনে নিয়ে ‘হাইব্রিড মডেলে’ হতে চলেছে এশিয়া কাপ। পাকিস্তানের সঙ্গে টুর্নামেন্টে আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা। ভারত ছাড়া প্রথম চার ম্যাচ পাকিস্তানে আর ভারতসহ টুর্নামেন্টের বাকি অংশ হবে শ্রীলঙ্কায়। ভারত এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে না যাওয়ার প্রেক্ষিতে পিসিবি চেয়েছিল, বিশ্বকাপে বাবর-রিজওয়ানদের ম্যাচ আহমেদাবাদে যেন না রাখা হয়। এ জন্য আইসিসির সহায়তাও চেয়েছিল পিসিবি।

কিন্তু পিসিবির এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি ভারত। বিশ্বকাপের খসড়া সূচিতে ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রেখেছে বিসিসিআই। ভারতের এমন একগুঁয়েমির কারণে বেজায় চটেছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ।

কাল এক অনুষ্ঠানে গিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমকে কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান বলেছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকলে ভারত বিশ্বকাপ বয়কট করতেন, ‘পাকিস্তান ২০১২ সালে ভারত সফর করেছে। এমনকি ২০১৬ সালেও (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে) গিয়েছিল। এবার ভারতীয়দের এখানে (পাকিস্তানে) আসার পালা। আমাকে যদি সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হতো, আমি কখনোই ভারতে যেতাম না। এমনকি বিশ্বকাপ খেলতেও নয়। আমরা সব সময় ওদের সঙ্গে খেলতে প্রস্তুত থাকি। কিন্তু ওরা সেভাবে সাড়া দেয় না। পাকিস্তানের ক্রিকেটের মান ভারতের চেয়ে অনেক ভালো। আমরা এখনো অনেক বিশ্বমানের খেলোয়াড় তৈরি করছি। তাই আমরা ভারতে না গেলেও কিছু আসবে-যাবে না।’

Modi extremist hy jab tak India Pak nh ata Pakistan ko bh nh jana chaye, Modi ny Cricket or mulk dono tabah krdeay he,ek din India k log hi modi ko marngy pic.twitter.com/91ZVpq7VZa

— Huzaifa khan (@HuzaifaKhan021) June 18, 2023

২০০৮ এশিয়া কাপ খেলতে সর্বশেষ পাকিস্তানে গিয়েছিল ভারত। আর বিসিসিআইয়ের আমন্ত্রণে পাকিস্তান দল সর্বশেষ ভারত সফর করেছে ২০১২-১৩ সালে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল সেবার খেলেছে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ। সে সময় ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস সরকার।

২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার দায় পাকিস্তানকে দেওয়া হলেও ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং খেলার সঙ্গে রাজনীতি মিশিয়ে ফেলেননি। বরং পাকিস্তান দলকে ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলেন। খেলা দেখতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে। নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজন করতে বিসিসিআই ও পিসিবির মধ্যে আলোচনার পথও খেলা রাখে মনমোহনের কংগ্রেস সরকার।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ পুনেতে, ভারত-পাকিস্তান আহমেদাবাদে

কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দৃশ্যপট বদলে যায়। ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক আবার শীতল হয়ে ওঠে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার কথা থাকলেও সেটা আলোর মুখ দেখেনি।

মিয়াঁদাদ মনে করেন, মোদিই দুই দেশের সম্পর্কে দেয়াল তুলে দাঁড়িয়েছেন, ‘একা একা কেউ প্রতিবেশী বাছাই করতে পারে না। একে-অন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হয়। আমি সব সময় বলে এসেছি, ক্রিকেট এমন একটা খেলা যেটা দুই দেশের মানুষকে একত্রিত করতে পারে, ভুল ধারণার অবসান ঘটাতে পারে। দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হলেও একসময় নিয়মিত খেলা হতো। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি মিশিয়েছে। সে একজন চরমপন্থী। সে ক্রিকেট ও দুই দেশকে বিভক্ত করে রেখেছে। একদিন ভারতের মানুষই মোদিকে মারবে। ’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.