ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের কক্ষ দখল নিয়ে গভীর রাতে ছাত্রলীগের মারামারি

0
136
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কক্ষ দখল নিয়ে মারামারিতে আহত শহীদুল্লাহ হল ও সূর্য সেন হলের ছাত্রলীগের দুই কর্মী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

কক্ষ দখল নিয়ে গভীর রাতে মারামারিতে জড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও মাস্টারদা সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে দুই হলে মারামারিতে জড়ান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির (শয়ন) ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসানের (সৈকত) অনুসারীরা। পরে তাঁদের দুজনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নেতা-কর্মীদের শান্ত করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১১টার পর থেকে শহীদুল্লাহ হল ও সূর্য সেন হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কক্ষ দখল নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত একটার পর থেকে শুরু হয় মারামারি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় রাত তিনটার দিকে।

শহীদুল্লাহ হল ও সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদুল্লাহ হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসানের অনুসারীরা সভাপতি মাজহারুল কবিরের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রিত কক্ষ দখল করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি বাধে। মাজহারুলের অনুসারীরা সেখানে মারধরের শিকার হন। অন্যদিকে সূর্য সেন হলে তানভীরের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কক্ষ দখল করতে যান মাজহারুলের অনুসারীরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই হলে মারধরের শিকার হন তানভীরের অনুসারীরা। মারামারিতে সূর্য সেন হলে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আর শহীদুল্লাহ হলে ৮ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে উভয় হলের দুজন করে চারজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মারামারি চলার সময় দুই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সূর্য সেন হলে যান ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতা। তাঁরা নেতা-কর্মীদের বুঝিয়ে শান্ত করেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও একপর্যায়ে সূর্য সেন হলের সামনে যান। পরে নেতা-কর্মীরা চলে যান। সেখান থেকে তিন নেতা যান শহীদুল্লাহ হলে।

জানা গেছে, গতকাল রাতের এই দুই হলের মারামারির রেশ অন্য হলেও ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলসহ কয়েকটি হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে বিভিন্ন হলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায়ই মারামারি বাধে। দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একধরনের পরস্পরবিরোধী মনোভাব রয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন না বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীর্ষ নেতা। গতকাল রাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল।

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পরে আমি সবাইকে বুঝিয়ে মীমাংসা করে দিয়েছি।’

ছাত্রনেতারা বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছেন উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাকসুদুর রহমান বলেন, তাঁরা তাঁদের মতো করে সংঘর্ষের ঘটনার কারণ জানার চেষ্টা করছেন। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.