অতিরিক্ত ওষুধেও ক্ষতি হতে পারে কিডনির

0
222
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ

কিডনি মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরের সব ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থগুলো কিডনির মাধ্যমে পরিস্রুত হয়। কিডনির অসুস্থতা মানব শরীরের ওপর বিশাল বিপর্যয় ডেকে আনে। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে আমরা কিডনি রোগ থেকে সহজেই নিজেদের রক্ষা করতে পারব।

অতিরিক্ত ওষুধ ক্ষতিকর: অতিরিক্ত ওষুধ বিশেষত ব্যথানাশক ওষুধ থেকে দূরে থাকতে হবে। এগুলো কিডনির ক্ষতি ডেকে আনে। সামান্য ব্যথা-বেদনায় ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের বাতিক থেকে বেরিয়ে আসুন।

ডায়াবেটিস কিডনির শত্রু: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিডনির জন্য মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করে। সে কারণে রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির কিডনিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে কিনা, সেটা জানার জন্য প্রস্রাবে এলবুমিন নামক একটি আমিষের উপস্থিতি প্রতি বছর পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ কিডনির মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। প্রতিদিন সে কারণে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। কিডনির সুস্থতার জন্য পানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: ওজন বৃদ্ধি পেলে তা আপনার কিডনির ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ওজনের কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়; যা প্রকারান্তরে কিডনি রোগ তৈরিতে ভূমিকা পালন করে।

ধূমপান, অ্যালকোহল বিপর্যয়কর: কিডনি সুস্থ রাখতে ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ কিডনির সমূহ বিপর্যয় ডেকে আনে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ একই সঙ্গে থাকলে তার কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়। সে জন্য ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে অবশ্যই রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার ও শরীরচর্চা: স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। যাঁদের কিডনি রোগ রয়েছে, তাঁদের অতিরিক্ত আমিষ এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরের সবগুলো অঙ্গকে সচল রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন শরীরচর্চা সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।

নিয়মিত চেকআপ: বছরে অন্তত একবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিজের স্বাস্থ্যের হালহকিকত জেনে নিন। যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ অথবা রক্তের কোলেস্টেরলের আধিক্য রয়েছে, তাঁদের নিয়মিত কিডনির অবস্থা জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

লেখক: লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.